Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

‘সাকিব-তামিমের লেখাপড়ার জন্য ভিক্ষা করেছিল তাদের মা’

বিশ্ব ক্রিকেটের বাইশ গজের পিচে অনেক আগেই আলো ছড়িয়েছে বাংলাদেশের তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে রাজধানী আদাবরের বেকারি গলির সাকিব-তামিমের লেখাপড়া চালানোর জন্য টানা চার বছর ভিক্ষা করেছিলেন তাদের মা সাথী আক্তার।

সাকিব আল হাসান (৭) ও তামিম ইকবাল (৬) কাছাকাছি বয়সের দুই ভাই। কল্যাণপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’জনই এখন প্রথম শ্রেণীতে পড়ছে।

বছর ছয়েক আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তাদের বাবা মো.ইমরুল। এর পর থেকেই পরিবারে নেমে আসে অভাব অনটন। দুই ছেলের লেখাপড়াসহ সংসারের নানা খরচ যোগাতে এক সময় বাসায় বাসায় ‘কাজের বুয়া’ হিসেবেও কাজ করেছেন সাথী আক্তার।

শুক্রবার দুপুরে আদাবরের বেকারি গলির বস্তির একটি জীর্ণ ঘরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় খুব নিবিড়ভাবে লেখাপড়ায় ব্যস্ত সাকিব তামিম।

একটু একটু করে বেড়ে উঠা সাকিব তামিমরা আগামী দিনগুলোতে সফলতার বীজ বপন করবে

ঘরে ঢুকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালকে তারা চেনে কি না জানতে চাইলে ক্ষুদে সাকিব তামিমের সরল স্বীকারোক্তি ‘ওরা ব্যাট বল খেলে, টিভিতে দেখি ওদের’।

সাকিব-তামিমের মা সাথী আক্তার চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমার স্বামী খুব ক্রিকেটপাগল লোক ছিলেন, গাড়ি চালানোর ফাঁকে ফাঁকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখত। তখন থেকেই তার ইচ্ছা ছিল আমার ছেলে হলে সাকিব তামিম নাম রাখা হবে। তিনি যখন মারা যান, সাকিবের তখন এক বছর বয়স আর তামিম পেটে।

আদাবরের বেকারি গলির এই ঘুপচি ঘরেই মায়ের সঙ্গে থাকে সাকিব-তামিম

‘‘তখন থেকেই আমার সংগ্রাম শুরু হয়, বাসায় বাসায় কাজ করাসহ ওদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে টানা চার বছর শ্যামলী ওভার ব্রিজের নিচে ভিক্ষা করতাম। ওরা ওভার ব্রিজের নিচে লেখাপড়া করত। আমি বাসা বাড়ির কাজ শেষ করে ওদের নিয়ে আসতাম’’, বলেন সাথী।

সাকিব-তামিম কি চায় তাদের বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে? এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিবের সোজা উত্তর আমি আর্মি অফিসার হতে চাই, আর তামিমের উত্তর ফায়ার সার্ভিস অফিসার।

মা সাথী আক্তারের সঙ্গে সাকিব-তামিম

সাকিব তামিমের লেখাপড়া কেমন চলছে জানতে চাইলে সাথী আক্তার বলেন: শ্যামলী ওভার ব্রিজে ভিক্ষার সময় এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়, তার মাধ্যমে দেশের একটি বেসরকারী সংস্থার পরিচালক সাকিব তামিমের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়, তাই এখন আর আমার ভিক্ষা করতে হয় না।

নিজের দুই ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করতে চান মা সাথী আক্তার। বেসরকারী সংস্থার ওই পরিচালকের প্রতিই তার এখন সব ভরসা।

Exit mobile version