প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বাংলাদেশে মহাবিপদের মতো আরেকটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ধেয়ে আসছে। ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের উপকূলে।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বুলবুল ভারতীয় সমুদ্রসীমায় অবস্থান করছিল, যা বালাসোর হয়ে খারোগপুরের পাশ দিয়ে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশ দিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন অংশে ১২০/১৩০ কিলোমিটার বেগে প্রবেশ করবে বলে স্যাটেলাইট অ্যানিমেশন ও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালি, পিরোজপুর ও ভোলাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সারাদেশে সব ধরণের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ইতিমধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নানা ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে শুরু করে আপদকালীন সময়ে ত্রাণ মজুদ করা হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলে। উপকূলবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। উপকূলের ৮ জেলাতে প্রায় ৪৫১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে উপকূলবাসী ইতিমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। আর যারা এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি তাদের নিয়ে যাবার প্রক্রিয়া চলছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। সার্বিক উদ্যোগে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি বেশ ইতিবাচক বলে আমাদের মনে হয়েছে।
এছাড়া আরেকটি বিষয় লক্ষনীয়, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রথমে আঘাত হানবে উপকূলের প্রাকৃতিক বেষ্টনি বলে পরিচিত সুন্দরবনে। তারপরে তা অনেকটাই দূর্বল হয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করবে। যদি ঘূর্ণিঝড়ের প্রবেশ পথে সুন্দরবন না থাকতো তাহলে হয়তো পূর্ণ শক্তির বুলবুল আঘাত হানতো লোকালয়ে। এরআগেও আইলা-সিডরসহ নানা ঘূর্ণিঝড়কে এভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছে সুন্দরবন। কাজেই এই বনসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত বন-পরিবেশ-প্রকৃতি রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে মানুষের নিরাপত্তা ও কল্যাণে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মানুষের কোনো হাত নেই। কিন্তু তা মোকাবিলায় সম্মিলিত পদক্ষেপ বেশ কার্যকর হতে পারে বলে আমরা মনেকরি। আমাদের আশাবাদ, প্রশাসনের প্রচেষ্টা ও জনগণের সচেতনতায় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে থাকবে।