চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ করতে গিয়ে সাসপেন্ড হয়েছিলাম: ডা. এজাজ

৩ মাসে স্যারের একটা নাটক করে যে তৃপ্তি পেতাম আমি ফিল করি এখন ৩ বছরেও সেই তৃপ্তি পাই না: এজাজুল ইসলাম

KSRM

অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও এজাজুল ইসলামের আরেক পরিচয়, তিনি একজন চিকিৎসক। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মানুষের সেবায় নিয়োজিত ডা. এজাজ প্রয়াত নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয়তাও কুড়িয়েছিলেন। হুমায়ূন আহমেদের নির্দেশনায় অভিনয় করতে এতোটাই পছন্দ করতেন যে, তাঁর ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে শুটিং করতে গিয়ে চাকরী থেকে সাসপেন্ড হয়েছিলেন!

Bkash

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও নির্মাণের মহান কারিগর হুমায়ূন আহমেদের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (১৯ জুলাই)। এদিন হুমায়ূনকে নিয়ে বলতে গিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন এজাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, তখন চাকরীতে আমি নতুন। সবে বিসিএস পাশ করে জয়েন্ট করেছি পিজি হাসপাতালে। এরপরেই হুমায়ূন আহমেদ স্যারের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমার শুটিং। স্যারের সাথে আমার প্রথম ছবি।

ডা. এজাজের ভাষ্য: কী যে উত্তেজনা কাজ করছিলো তখন, বলে বোঝানো যাবে না। মাথার মধ্যে ওই ছবি ছাড়া অন্যকোনো চিন্তা ই ছিল না। স্যার আমাকে কাস্ট করার পর হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে শুটিংয়ে যাই। গানের শুটিং করছি তখন হাসপাতাল থেকে খবর এলো, পরদিন মন্ত্রী মহোদয় হাসপাতালে আসতে পারেন। আমার ছুটির আবেদনে সমস্যা আছে। এটা নিজে এসে ঠিক করতে হবে। মন্ত্রী এসে দেখলে চাকরী নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। কিন্তু আমি ‘অসম্ভব’ বলে এড়িয়ে গেলাম।

Reneta June

জানালাম, সমস্যা থাকলে শুটিং শেষ করে এসে ঠিক করবো। কোনোভাবেই শুটিং ছেড়ে আসতে পারবো না। পরদিন খবর পাই, মন্ত্রী ঠিকই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। আমাকে সাসপেন্ড করেছেন! শোনার পর আমার একটুও বিকার হয়নি। হাসপাতাল থেকে লোক এসে আমাকে বলেছিল, স্যার দ্রুত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু তারপরেও আমি শুটিং ছেড়ে যাইনি। এতে স্যার (হুমায়ূন আহমেদ) যদি রাগ করতেন! আমি বলে দিয়েছিলাম, ছবির কাজ শেষ হবে। তারপর যাবো।

গরীবের ডাক্তার খ্যাত এজাজ বলেন: এতে আমার চাকরী থাকলে থাকবে, না থাকলে সাসপেন্ড হয়ে থাকবো। কোনো চিন্তা নেই। কারণ, নিশ্চিত ছিলাম আমি চলে গেলে স্যার কষ্ট পাবেন। আমার চাকরীর চেয়ে স্যারের কষ্টটা আমার কাছে বেশি ছিল। শেষ পর্যন্ত আমি যাইনি। ঠিকই ছিলাম। পরে অনেক চাকরী নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আবার চাকরীতে বহাল হই।

আজকের অভিনেতা এজাজকে কাজের সুযোগ দিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। তার অসংখ্য নাটকে কাজ করে ডা. এজাজ পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। ৭ বছর হয়ে গেল হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে নেই। তার নির্দেশনায় কাজকে সারাক্ষণ মিস করেন বলে জানান ডা. এজাজ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন: স্যারের নাটকে অভিনয় করে যে তৃপ্তি পেতাম এখন কাজ করে ওই তৃপ্তি আর পাইনা। ৩ মাসে স্যারের একটা নাটক করে যে তৃপ্তি পেতাম আমি ফিল করি এখন ৩ বছরেও সেই তৃপ্তি পাইনি। শিল্পী হিসেবে কাজের সঠিক তৃপ্তি হুমায়ূন স্যারের কাজ থেকেই পেয়েছি। অন্যদের কাজ করে সেভাবে তৃপ্তিটা পাইনা। এটা দুর্ভাগ্য আমার।

স্যার না থাকায় এই দুঃখটা যতদিন বাঁচব এটা রয়েই যাবে আমার মধ্যে। আরও একটা বিষয় আজ মনে পড়ছে, স্যারের কোনো কাজে আমি সুযোগ না পেলে মনে হতো জীবন থেকে অনেককিছু হারালাম। অনেকসময় হতো কাজের মধ্যে চরিত্র দেয়ার জায়গা থাকতো না। এখানে স্যারের কোনো দোষ থাকতো না। তাও মনে হতো, আমি কাজটা মিস করলাম। স্যার কাজ করছেন আমি কেন থাকবো না? এটা নিয়ে বিরাট আফসোস হতো। মাঝেমধ্যে স্যার এই বিষয়টাও বুঝতে পারতেন।-বলছিলেন স্মৃতিকাতর এজাজ।

বিজ্ঞাপন

Nil Joler Kabbo
Bellow Post-Green View