‘ক্ষমতালোভী সামরিক বেসামরিক আমলাতন্ত্র, অতি মুনাফালোভী উঠতি পুঁজিপতি ব্যবসায়ী এবং উচ্চাভিলাষী রাজনৈতিক শক্তি- এই ত্রিশক্তির আঁতাত যেদিন গড়ে উঠবে সেদিনই ওরা আঘাত হানবে।’ বিস্ময় যুবক শেখ মনির এই ভবিষ্যতবাণী সত্যি হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানব ইতিহাসের ভয়ংকরতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।
শেখ মনি, কিংবদন্তি তারুণ্য, তারুণ্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র, সময়ের চেয়েও প্রাগ্রসর, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতায় অনন্য। বহুমাত্রিক প্রতিভার এক অসাধারণ মিশেলে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সমসাময়িকদের থেকে অনন্য উচ্চতায়। রাজনৈতিক বুদ্ধিদীপ্ততা ও প্রখর দূরদর্শিতার জন্য ছিলেন সমসাময়িক ও অনেক বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে সমীহের কারণ। এক কথায় তিনি ছিলেন একের ভিতরে অনেক। মেধাবী ছাত্রনেতা, শ্রমিক নেতা, যুব নেতা, আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা, সংবাদপত্র প্রকাশক, কলামিস্ট, তুখোড় বক্তা, প্রখর ধীশক্তি ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। শেখ মনি অকালে ঝরে পড়া উজ্জ্বল নক্ষত্র। মাত্র ৩৫ বছরের আয়ুষ্কালে হয়ে আছেন কিংবদন্তি, ইতিহাসের অংশ আর গবেষণার প্রতিপাদ্য ।
স্বাধীনতা উত্তর মুক্তিযুদ্ধ ফেরত বাংলার যুব সমাজ যখন রাজনৈতিকভাবে অসংগঠিত এবং অনেকটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যহীন সময় অতিক্রম করছিল তখন তিনি তাদেরকে একই আদর্শের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করতে একটি যুব সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। কারণ তখন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ ব্যতীত এর মাঝামাঝি অন্য কোনো সংগঠন ছিল না যেখানে সদ্য সাবেক ছাত্রনেতারা একটি প্লাটফর্মে থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত থাকতে পারে। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছিল অপেক্ষাকৃত জ্যেষ্ঠদের সংগঠন। আর সদ্য সাবেক হওয়া ছাত্রনেতাদের আওয়ামী লীগে স্থান পাওয়া সহজসাধ্য ছিল না। তিনি তার দূরদৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন যুদ্ধ ফেরত প্রশিক্ষিত যুবক ও সদ্য সাবেক তরুণ ছাত্রদের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে না নিয়ে আসলে তারা বিপথগামী হয়ে যেতে পারে।
তাই যুব আন্দোলনের পথিকৃৎ শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুমতিক্রমে আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলভিত্তি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতা এই জাতীয় চার মুলনীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে শক্তিশালীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমুহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুবলীগের প্রতিষ্ঠিত হয়।

এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্য থেকে স্বাধীনতা ও প্রগতিকামী যুবক ও যুব মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই যুবলীগের মূল উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুবলীগের নেতা কর্মীরা দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করে।
সে সময়ের প্রেক্ষাপটে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে যুবলীগের গঠনতন্ত্র ও কাঠামো বিন্যাস ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী। যুবলীগের শীর্ষপদকে ‘চেয়ারম্যান’ ও সম্মেলনকে ‘কংগ্রেস’ এবং সহসভাপতির পদকে ‘প্রেসিডিয়াম সদস্য’ নামকরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ মূলদলে আত্তীকরণ করে। তৎকালীন সময়েই যুবলীগ ছিল আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রতিষ্ঠিত। প্রথম যুব কংগ্রেস দেশি-বিদেশি অনেক অতিথি অংশগ্রহণ করে।
বাগ্মিতা ও লেখালেখিতে তিনি ছিলেন অনন্য। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বক্তৃতা করতেন অনায়াসে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই ছিলেন সমান পারদর্শী। সে সময়ের তুখোড় বক্তারাও তার বক্তব্যের প্রশংসা না করে পারতেন না। তার লেখার প্রাঞ্জলতা ও গতিময়তা প্রশংসানীয়। স্বাধীনতা উত্তর সরকারের আমলাদের গৃহীত বিভিন্ন অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক নীতির প্রতি কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেন। তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ও মনোভাব প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ বাহন ছিল বাংলার বাণী ও আওয়ামী যুব লীগ। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি নিয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতেন যা সরকারকে নীতিনির্ধারণে প্রভাবিত করতো।
সংবাদপত্র জগতেও শেখ মনি ছিলেন নিজস্বতায় ভাস্বর। সাপ্তাহিক বাংলার বাণী পত্রিকাকে জাতীয় দৈনিকে পরিণত করেন। দেশে প্রথম জার্মানি থেকে গজ অফসেট প্রিন্টিং মেশিন আমদানির ব্যবস্থা করেন। সেটাই তখন দেশের আধুনিক প্রিন্টিং ব্যবস্থা। ৭৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি সাপ্তাহিক সিনেমা ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন। ৭৪ সালের প্রথম দিকে একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রয়োজন অনুভব করে প্রকাশ করেন ‘বাংলাদেশ টাইমস’। প্রেস, কম্পোজ, মেকাপ, ফটোগ্রাফ ও সুন্দর ছাপার বিষয়ে তার ছিল সুক্ষ্ম জ্ঞান যা নিয়ে অনেকেই নানা সময়ে গল্পে বিস্ময় প্রকাশ করতেন। তিনিই প্রথম বাংলার বাণীর ব্যানার হেডিং ও গুরুত্বপূর্ণ খবরের হেডিং লাল কালিতে ছেপেছিলেন যা নিয়ে সে সময় অনেকেই ঠাট্টা-তামাশা করেছিল। অথচ দশ পনেরো বছরের মধ্যেই সকল প্রত্রিকা কালার হেডিং শুরু করে। তিনি ছিলেন দূরদর্শী; সময়ের চেয়ে অগ্রসর।
সত্য ও ন্যায়ের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের কঠোর অনুসারি। কোনো বিষয় তিনি সঠিক মনে করলে একা হলেও তাতে অটল থাকতেন। আবার কোনো সিদ্ধান্ত ভুল মনে হলে সেখান থেকে সরে আসতেও ছিলেন দ্বিধাহীন অসম সাহসী। সে দুঃসাহসিকতার প্রমাণ তিনি রেখে গেছেন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে।
মুজিবনগর প্রবাসী সরকারের সদস্যগণ ইন্দিরা সরকারের সাথে ২৫ বছর মেয়াদি শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেয়। শেখ মনি এমন খবর পাওয়া মাত্র বিশেষ বিমানে দিল্লিতে বিশেষ প্রোটকলে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং কিছুক্ষণ কথা বলে দ্রুত বেরিয়ে আসেন। ইন্দিরা গান্ধীর অফিসে তখন সাক্ষাৎ প্রার্থী হিসেবে অপেক্ষমান ছিল মুজিবনগর সরকারের সদস্যবৃন্দ। সেদিন তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলন, ‘বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের সাথে যে কোনো চুক্তি করার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়টি সবার উপরে রাখতে হবে। নইলে আমাদের বাহিনী নিয়ে আমরা দেশের অভ্যন্তরে চলে যাবো এবং স্বাধীনতা পেতে যত বছর লাগে আমরা যুদ্ধ চালাবো।’
এ ঘটনার পরই শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি ব্যাপক রদবদলের পরে স্বাক্ষরিত হয়। তার এমন সাহসিকতা ও ব্যক্তিত্বে সেদিন ইন্দিরা গান্ধী মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক বড় মাপের নেতা। তিনি তার সিনিয়র, সমবয়সী ও প্রায় কাছাকাছি বয়সের নেতাদের মধ্যে ব্যতিক্রমী উচ্চতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। আর সেটা তার রাজনৈতিক পড়াশোনা, প্রখর ধীশক্তি, দূরদর্শিতা ও অস্বাভাবিক সাহসের জন্য।
৭৪ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের চেয়ারম্যান, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল শ্রমিক লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৭৫ এর মধ্যভাগে বাকশাল গঠন ও তাতে যোগদানের আগ পর্যন্ত ঐসব সংগঠনে আর ফিরে যাননি।
তিনি তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনৈতিক অভিজ্ঞানের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলেন সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, পুঁজিবাদী ও দেশবিরোধী চক্রকে রাজনৈতিক শক্তির কাঠামোগত নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে স্বাধীনতা আইয়ুব – মোনায়েম সরকার থেকে ভিন্ন কিছু নয়।
তাই বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব বাকশাল গঠনের সাথে তিনি ছিলেন গভীরভাবে সম্পৃক্ত। বাকশাল কেন্দ্রীয় কমিটির (সংগঠন, পরিকল্পনা ও গবেষণা বিষয়ক) অন্যতম সম্পাদক নিযুক্ত হওয়ায় তিনি নতুন উদ্যমে নিরলসভাবে কাজ করছিলেন। ৭১’এ সমাজ বিপ্লব সম্পন্ন হওয়ার আগেই মাঝপথে মিত্রশক্তির সহায়তায় দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। তাই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের এ সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে দারুন উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। ৭৫’র ৭ জুন বাকশাল কেন্দ্রীয় কমিটি ও অঙ্গসংগঠনের কমিটি সমূহ ঘোষণা করা হয়। প্রতিটি জেলায় একজন গভর্ণর ও বাকশালের একজন সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। চলতে থাকে প্রশিক্ষণ কর্মশালা। ১৪ আগস্ট বেইলী রোডে জেলার সম্পাদকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বাকশালের নীতি আদর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এক অনবদ্য ও জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দেন। এটাই জীবনের শেষ বক্তব্য।
অতঃপর ১৫ আগস্ট; সেই অভিশপ্ত রাত, বাঙালির বেদনার বিষাদসিন্ধু। বাবা মা হারিয়ে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান পাঁচ বছর ও চার বছর বয়সী ছোট্ট শিশু শেখ পরশ ও শেখ তাপস। পিতা, মাতা এবং সবচেয়ে কাছের স্বজন প্রিয় মুখগুলি হারানোর পরে তাদের জীবনে স্বাভাবিকতাটা আর ছিল না। তারা কার জন্য শোক করবে, কার জন্য কাঁদবে যখন সবচাইতে কাছের মানুষগুলি এক নিমিষেই হারিয়ে যায়। সে এক গভীর ক্ষত।
এই হত্যাকাণ্ডের দ্বারা জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ পরশ ট্রমাটাইজড ছিলাম অনেক দিন এবং রাজনীতি থেকেও ছিলেন দূরে। রাজনীতি নিয়ে এক ধরনের অনীহাও ছিল। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেই নিজস্ব জগত গড়েছিলেন। কিংবদন্তি পিতার জেষ্ঠসন্তান হয়েও রাজনীতিতে ছিলেন সম্পূর্ণ অপরিচিত এক মুখ।
কিন্তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা তার পাকা জহুরির চোখ দিয়ে ঠিকই খুঁজে বের করেন পরশ পাথর। আওয়ামী যুব লীগের ষষ্ঠ কংগ্রেস নেতৃত্ব যখন টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো ব্যবসা, পদ বানিজ্য, কমিটি বানিজ্য সহ নানা নেতিবাচক কর্মকান্ডে দেশব্যাপী চরম সমালোচিত ও বিতর্কিত তখন তিনি যুবলীগের দায়িত্ব তুলে দেন সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ এক যুবকের হাতে। তিনি হলেন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির জৈষ্ঠপুত্র শেখ ফজলে শামস পরশ।
দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যুবলীগের অতীত গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত করা, যুবলীগের প্রতি যুব সমাজ তথা আপামর জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং যুবলীগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমুন্নত করা। এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি সুদৃঢ় ও স্পষ্ট অবস্থান নেন। এরইমধ্যে বৈশ্বিক মহামারী করোনার ঢেউ আঘাত হানে বাংলাদেশে। সেই সাথে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়। এসকল সংকটজনক পরিস্থিতিতেই যুবলীগ তার মানবিক ভাবমূর্তি দেশব্যাপী সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত করে জাতীয় সংসদে যার ভূয়সী প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।
যুবলীগ দেশব্যাপী স্বাস্থ্যবিধি প্রচারের পাশাপাশি মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার, হেক্সাসল, সাবান বিতরণ করে। যুবলীগ সরাসরি ৪৩ লক্ষ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দান করে। যার মধ্যে রয়েছে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, হতদরিদ্র, শ্রমজীবী, পোশাক শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা ভ্যান চালক, মুচি, প্রতিবন্ধী, হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়। ট্রাক, রিকশা ভ্যানে করেও বস্তিবাসীদের খাবার পৌঁছে দেয় যুবলীগ। ঢাকা মহানগর ও বিভিন্ন জেলা – উপজেলা পর্যায়ে ২৪ ঘণ্টা ফ্রি এম্বুলেন্স সার্ভিস ও ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সার্ভিস প্রধান করে যুবলীগ।
চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে যুবলীগ। শ্রমিক সংকটে কৃষক ধান কেটে সহায়তা করে যুবলীগ। রমজান মাসে ইফতার ও রান্না করা খাবার বিতরণ করে। মুজিব শতবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশব্যাপী বৃক্ষরোপন করে।
মানবিক ভাবমূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল উচ্চশিক্ষিত, মেধাবী, ত্যাগী, যোগ্য ও পরিচ্ছন্ন যুবকদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা এবং সকল বিতর্কিতদের সংগঠন থেকে বিতাড়িত করা। সুদীর্ঘ এক বছর যাচাই-বাছাইরের পরে সকল শ্রেণি ও পেশার মধ্য থেকে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি ও ২০০ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি জাতির সামনে ঘোষণা করেন। যে কমিটি দেশব্যাপী সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। কারণ এ ঐতিহাসিক ও যুগোপযোগী কমিটি তরুণ আইনপ্রণেতা, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাবেক ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে গঠিত। এ কমিটির মাধ্যমে অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানো একঝাঁক যুবক খুঁজে পেয়েছে আলোর শিখা; কালিমা মুক্ত রাজনীতির মসৃণ পথ। তাই তিনি আজ পরিণত হয়েছেন যুবরত্নে। অভিবাদন যুবরত্ন শেখ পরশ।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)