মানবপাচারের মামলায় হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন কক্সবাজারের এক ‘শিশু’।
হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে সোমবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহরিুল হকের বেঞ্চ শিশুটিকে জামিন দেন। এসময় শিশুটির মা তার সঙ্গে ছিল।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জামান আকতার বুলবুল। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
এবিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘একদম ছোট্ট একটা ছেলে। বয়স, সর্বোচ্চ ১২ বছর হবে। আদালত তাকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন।’

আর জামিন আবেদনের পক্ষের আইনজীবী জামান আকতার বুলবুল বলেন, ‘ছেলেটির জন্ম ২০০৭ সালের ১০ আগস্ট। আর ২০১৪ সালের ২০ জুনে ও গত বছরের ২৭ জুনের দুটি ঘটনা উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রথম ঘটনার সময় শিশুটির বয়স ছিল সাত বছরের একটু বেশি। আর মামলা করা হয়েছে গত বছরের ২৯ নভেম্বর। তার মানে এখনও সে শিশু, তার বয়স ১২ বছরের মত। যদিও মামলায় শিশুটির বয়স দেখানো হয়েছে ২২ বছর।’
আইনজীবী আরো বলেন, ‘গত ১৪ অক্টোবর এ মামলায় রামু থানার পুলিশ শিশুটিকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে যায়। কিন্তু পুলিশ তাকে দেখার পর গ্রেপ্তার না করে ফিরে আসে। পুলিশের মনেও এই প্রশ্ন জেগেছে এইটুকুন বাচ্চা কিভাবে মানবপাচারের মত অপরাধের সাথে জড়িত! পরে গত বৃহস্পতিবার অন্যান্য আসামির সাথে হাইকোর্টে এসে জামিন আবেদন করে শিশুটি। আজ আদালত তাকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন।’
গত বছর ১৪ অক্টোবর রামুর হাজি পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম (৪১) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে একটি পিটিশন মামলা করেন। মামলায় রামুর চাকমারকুল এলাকার ওই শিশুসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৪ সালের ২০ জুন ও ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের দুটি ঘটনার উল্লেখ করা হয় মামলায়। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিনা খরচে, ভাল বেতনে মালয়েশিয়ায় কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৪ সালে ২১ জুন বাদি ও অন্যান্য ভিকটিমদের কক্সবাজারের লামুনীচর থেকে জাহাজে তুলে দেয়। কয়েকদিন পর থাইল্যাণ্ডের উপকূলীয় পাহাড়ের জঙ্গলের কাছে জাহাজ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ওইখানে দালাল চক্রের লোকজন মারধর করে তাদের কাছ থেকে স্বজনদের মোবাইল নাম্বার নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। মোবাইল ফোনে স্বজনদের কাছ থেকে এই আসামি (শিশু), মামলার প্রধান ও দ্বিতীয় আসামি ২ লাখ টাকা নেয়। পরবর্তীতে আসামিদের আরও ১ লাখ টাকা দেওয়ার পর মালেয়শিয়া পৌঁছান মামলার বাদী নুরুল ইসলাম। ২০১৭ সালের জুনে মালেয়শিয়া অভিযানকালে তিনি আটক হন। এক বছর জেল খাটার পর দেশে ফিরে এসে মামলা করেন।
