
লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে উভমুখী যাত্রীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
বুধবার সকাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার যাত্রীরা ছুটতে শুরু করেছে ঢাকার উদ্দেশ্যে। বাংলাবাজার থেকে লঞ্চে করে পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া আসতে দেখা গেছে। আবার দক্ষিণবঙ্গগামী শিমুলিয়া লঞ্চে করে বাংলাবাজার উদ্দেশ্যে পদ্মা পাড়ি দিতে দেখা গেছে। লঞ্চে উভয়মুখী যাত্রীদের ভীড় রয়েছে। তবে ফেরিতে যাত্রী পারাপারের চাপ কমেছে লঞ্চ চলাচল করাতে।
মো: আল আমিনের বাড়ি বরিশাল বাড়ি। বাংলা বাজার ঘাট থেকে লঞ্চে করে শিমুলিয়া হয়ে তিনি ঢাকা যাবেন। ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে দোকানে তিনি কাজ করেন। লকডাউন উঠে যাওয়ায় তিনি আজ কাজে যোগদান করবেন। তাই পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঢাকায় যাওয়া। পথে খুব একটা ভোগান্তি হয়নি তার।
রাজিয়া আক্তার ফরিদপুর থেকে এসেছেন। ফেরিতে পার হয়েছেন পদ্মা। সাথে রয়েছে নবজাতক শিশু। ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যাবেন শিশুকে দেখাতে। পথে খুব একটা ভোগান্তি হয়নি। তবে কিছু অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়েছে।

মিথুন সাহা এসেছেন বাগেরহাট থেকে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কর্মরত ঢাকাতে। ঈদের আগ থেকে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। আজ লকডাউন উঠে যাওয়ায় ঢাকায় অফিসে যোগদান করবেন।
নুর উদ্দিন মিয়া তিনি এবং পরিবারের তিন সদস্য ঢাকার উত্তরা থেকে এসেছেন ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে । শিমুলিয়া ঘাট হয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে যাবেন যশোর। প্রতিবার কোরবানি ঈদ করা হয় গ্রামের বাড়িতে। এবার কোরবানি ঈদে যাওয়া হয়নি গ্রামে। বড় ভাই খুবই অসুস্থ তাই স্বপরিবারে যাচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক নৌ ট্রাফিক শাহাদাত হোসেন জানান, সকাল থেকে বাংলা বাজার ঘাট থেকে লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে আসতে শুরু করেছে। কিছু সংখ্যক যাত্রী বাংলাবাজারে উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। তবে ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের চাপ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিআইডব্লিউটিসি’র সহকারী ব্যবস্থাপক বাণিজ্য মাহবুবর রহমান জানান, সকাল থেকে পাঁচটি ফেরি চলছে। বাংলা বাজার থেকে যেসব ফিরে আসছে খুব একটা যাত্রী নেই, যানবাহনে পরিপূর্ণ। তবে যেসব ফেরি শিমুলিয়া ছেড়ে যাচ্ছে ছোট যানবাহন এবং কমসংখ্যক গাড়ি দিয়ে ফেরি ছাড়া হচ্ছে। লঞ্চ চলাচল করাতে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যেই লঞ্চে আসা-যাওয়া করছে। শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় দেড় শতাধিক যানবাহন রয়েছে পারাপারের অপেক্ষায় তবে এরমধ্যে ত্রিশটি পণ্যবাহী ট্রাক।
তিনি আরও জানান, ভারী যানবাহন পার হবে কি হবে না এ ব্যাপারে এখনো ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্তের কাগজপত্র আমরা পাইনি। তবে প্রতিটি ফেরিতেই কম সংখ্যক যানবাহন নিয়ে ফেরিগুলো পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।
চাপ বেড়েছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায়
যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ বেড়েছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে। সকালে চাপ কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে ঘাট এলাকায়। এতে করে ঘাট এলাকায় দেখা দিয়েছে যানবাহনের র্দীঘ লাইন। যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে পারের জন্য।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যলয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ভারী যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকায় আজ সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়। এসময় ঘাট এলাকায় পাঁচ শতাধিক পন্যবাহী ট্রাক পারের অপেক্ষায় রয়েছে। ছোট- বড় ১৪টি ফেরি দিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন