মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক তার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট এই অঞ্চলের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর বর্বর অভিযানের পর এই সংকট সৃষ্টি হয়। জাতিসংঘ একে ‘জাতিগত নিধন অভিযান’ বলে অভিহিত করেছে।
মিয়ামার এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। মিয়ানমারের দাবি, গত আগস্টে আরাকান সালভেশন আর্মির (আরসা) জঙ্গিদের হামলার কারণে এই অভিযান।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই সংকটের কারণে বহু বেপরোয়া ও বাস্তুচ্যুত মানুষ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো চরমপন্থী দলের ফাঁদে পা দিতে পারে। বিষয়টা এখন আর কোন এক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নেই।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া-আসিয়ান এর বিশেষ বৈঠকে নাজিব এই কথা বলেন। নাজিব যখন এই বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তার কয়েক মিটার দূরেই বসেছিলেন মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চি।
জাতিসংঘ শুক্রবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রায় শতকোটি ইউএস ডলার অনুদানের আবেদন করেছে।
এই সংকেটের যথাযথ ও টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে মালয়েশিয়া সাহায্য করতে প্রস্তুত জানিয়ে নাজিব রাজাক জঙ্গি হুমকি মোকাবেলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
“আমাদের সতর্ক হতে হবে এবং সহোযোগিতা বাড়াতে হবে। কারণ ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের পতন, তাদের আন্ডারগ্রাউন্ডে যেতে বাধ্য করেছে এবং অন্যত্র মাথা তুলে দাড়াতে উন্মুখ। বিশেষ করে তাদের জন্য অনুকূল অস্থিতিশীল এলাকাগুলোতে, যেখানে তারা সহজেই কার্যক্রম চালাতে করতে পারবে।”
ফিলিপাইনের মারাউয়ি শহর আইএসপন্থী জঙ্গি দলের দখলে নেওয়ার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমাদের মারাউয়ি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। মিনদানাও অঞ্চলের (ফিলিপাইনের) কমপক্ষে ১০টি জঙ্গি দল আইএস এর সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা ঘোষণা করেছে।
আসিয়ান ও অস্ট্রেলিয়া ১৯৭৪ সাল থেকেই ডায়লগ পার্টনার। আসিয়ানভূক্ত ১০টি দেশের মধ্যে মিয়ানমারও রয়েছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে ছাড়া বাকি ৯টি দেশের নেতারা সিডনির এই সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন। দেশে কিছু জরুরি কাজের জন্য দুতার্তে এই সম্মেলনে অংশ নিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার এবং ভিয়েতনাম।