চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে যে উদ্যোগের শুরু হয়েছে, মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও তা অব্যহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের বর্তমান সরকারের সঙ্গে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সে সময় পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আমরা একটি কূটনৈতিক ধারাবাহিকতার মধ্যে ছিলাম। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে একটি নতুন সরকারের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের দূতাবাস সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘মিয়ানমারের বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন হবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা সমুন্নত থাকবে।’
‘‘একই সঙ্গে দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আজকের অধিবেশনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
গত ১৯ জানুয়ারি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছিল।
সেই বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, মিয়ানমারকে ‘গ্রামভিত্তিক’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগামী এপ্রিল-জুনে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু করা যাবে।

এখন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারির পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক অনিশ্চিত বলেও জানান তিনি।
যদিও মিয়ানমারে সেনা অভ্যূত্থানের পর সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শুধু বেসামরিক সরকারই নয় দেশটির সেনাবাহিনীর সাথেও কূটনৈতিক দেন-দরবারে রয়েছে ঢাকা। ইতিহাস বলে দেশটির সামরিক শাসনের আমলেই রোহিঙ্গাদের দু’দফায় প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়েছিল।’
সেনাবাহিনী ও বেসামরিক সরকারের মধ্যে নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে।
তার পরপরই এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সাং সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার সদস্যসহ প্রভাবশালী রাজনীতিকদের আটক করে সেনাবাহিনী।
পরে সেনাবাহিনী এক ঘোষণায় জানায়, আগামী ১ বছরের জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতায় থাকবে তারা।