অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজে ভরাডুবির পর কোচের পদ হারানো ক্রিস সিলভারউড। নির্বাচক প্যানেলেও আসে পরিবর্তন। জো রুটের অধিনায়কত্ব অবশ্য ঠিকই টিকে গিয়েছিল। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারের পর অধিনায়কের পদ থেকে রুটের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়করা।
গ্রানাডা টেস্টে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১০ উইকেটে হারের পর টেস্ট সিরিজ হারে ইংল্যান্ড। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এটি রুটের ২৪তম হার। তার উপরে টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি হারের মুখ দেখেছেন গ্রায়েম স্মিথ (২৯) ও স্টিভেন ফ্লেমিং (২৭)।
একটি পত্রিকার কলামে সাবেক অধিনায়ক মাইক আথারটন লিখেছেন, ‘রুটের অধিনায়কত্ব অচল। তার অধীনে দল টানা ৫ সিরিজে জেতেনি। সর্বশেষ ১৭ টেস্টের ভেতর কেবল একটিতে জিতেছে। সামর্থ্য থাকার পরেও এটি দলের জন্য জঘন্যভাবে ছুটে চলা।’
রুটের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া যে দলে দ্রুতই আমূল পরিবর্তন আনবে না, সেটিও স্পষ্ট করে দেন ইংল্যান্ডকে বাজে দল আখ্যা দেয়া আথারটন।
‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে অবহেলার মূল্য ইংল্যান্ডকে দিতে হচ্ছে। এমন সময় আসে যখন একজন অধিনায়কের নতুন কিছু বলার থাকে না। তার খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করার নতুন কোনো কৌশল থাকে না। থাকে না ভিন্ন সুর ও ধরণ।’
আরেকটি পত্রিকার কলামে সাবেক অধিনায়ক নাসির হুসেইন স্কোয়াড থেকে জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে বাদ দেয়াকে একটি জবরদস্তিমূলক সিদ্ধান্ত হিসেবে দাবি করেছেন। তার মতে, রুটের সঙ্গে অ্যান্ড্রু স্ট্রিসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচক প্যানেল, পল কলিংউড ও নির্বাচক জেমস টেলরের দল নির্বাচনে ‘জি হুজুর’ ভূমিকা ছিল।
‘রুট একজন বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান এবং খুব পছন্দের একজন ছেলে। তবে আমি মনে করি, অধিনায়ক হিসেবে খেলার জন্য তার সহজাত মানসিকতা ছিল না।’
আগামী জুনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের বেন স্টোকসকে অধিনায়ক হিসেবে যোগ্য মনে করে নাসির হুসেইন কলামে লিখেছেন, ‘জো (রুট) যদি নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত না নেন, তাহলে সিদ্ধান্তটা তার হাত থেকে সরিয়ে নেয়া উচিৎ। তারপর নতুন কোচের উচিৎ বেন স্টোকসের সঙ্গে বসা এবং তাকে জিজ্ঞাসা করা যে তিনি মানসিকভাবে কোন অবস্থায় আছেন? কোচের যদি তার কাছ থেকে শোনা কথা পছন্দ করেন, তবে স্টোকসের দায়িত্ব পাওয়া উচিৎ।’
ইংল্যান্ডের ধারাবাহিক টেস্ট বিপর্যয় নিয়ে আরেক সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভনও লিখেছেন কলাম। তার মতে, রুটের অধিনায়কত্ব যথেষ্ট ভালো ছিল না এবং তিনি ধারাবাহিকভাবে কৌশল অবলম্বনে ব্যর্থ হয়েছেন।
‘জো’র নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে যে তার পরের দেড় বছর নিজেকে চালানোর শক্তি আছে কি না। শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রশ্ন তুলতে হবে জো রুট আর অধিনায়ক না থাকলে ইংল্যান্ড কতটা খারাপ হবে? যদি তার শক্তি থাকে এবং একজন নতুন কোচ তাকে আগের কোচদের চেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে, তাহলে হয়তো সে ভালোভাবে ফিরে আসতে পারে। কিন্তু আমি নিশ্চিত নই।’
এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর জো রুট বলেছেন, ‘যেভাবে শেষ হল তা নিয়ে হতাশা রয়েছে। কারণ আমি মনে করি এই সিরিজজুড়ে আমরা সত্যিই কিছু ভালো ক্রিকেট খেলেছি। যদি আমরা শিখতে থাকি এবং একটি দল হিসেবে উন্নতি করতে থাকি, যদি জিততে শুরু করি, তাহলে আমাদের সেই পদ্ধতিটি ধরে রাখতে হবে।’