পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন হয়রানির ঘটনায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরুর পর তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি জানান। এর আগে প্রতিবাদী কার্টুন অাঁকেন শিক্ষার্থীরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে জড়িতদের গ্রেফতার এবং উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি খুব দ্রুতই প্রতিবেদন দেবে। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান ভিসি।
তবে তিনি স্পষ্টভাবেই বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
পহেলা বৈশাখে যৌন হয়রানির ঘটনায় টিএসসিতে আরো কয়েকটি প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর নির্ভর না থেকে সবাইকে এক হয়ে রুখে দাড়ানো আহবান জানান বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মী রামেন্দু মুজমদার। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে, ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অবিলম্বে খুঁজে বের করার কথা তিনি বলেন।
জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, একের পর এক ঘটনা পুলিশের চোখের সামনে ঘটছে। কিছুদিন আগে অভিজিৎ রায়কে ঠিক একি এলাকায় হত্যা করা হয়েছে। আবার ঠিক একি এলাকায় নারীদেরকে লাঞ্চিতের মতো ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ যদি নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে আমরা আমাদের নিরাপত্তা একাই নেবো।
আর প্রতিবাদ সমাবেশ করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে শনিবার পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লাকী আকতার সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অপসারণ দাবি করেন।
পুলিশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঘটনার সময় কাছেই পুলিশ ছিল, কিন্ত তারা হাত গুটিয়ে নিরব ছিল।
বামপন্থী অন্যান্য ছাত্র সংগঠন এবং নারী সংগঠনগুলোও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে দায় এড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ এনেছে।
তবে অভিযোগ, সমালোচনা এবং প্রতিবাদের মধ্যে ঘটনা তদন্তে রমনা অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খানকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। কী পরিস্থিতিতে কী ধরণের ঘটনা ঘটেছিলো, ঘটনার জন্য দায়ী কারা এবং ঘটনার সময় পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিলো কি না ,তা তদন্ত করে সুপারিশসহ তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া যৌন হয়রানির অভিযোগ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে প্রামাণিক তথ্য চেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে অফিস চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির আহবায়ক ড. নাসরিন আহমাাদের দপ্তরে লিখিতভাবে প্রমাণাদি জমা দেওয়া যাবে।