স্বাধীন বাংলাদেশের আগেই শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন শাম্মী আক্তার। তখনকার রেডিওতে খুব শোনা যেত তার গান। একটা সময়ে নিজেকে চলচ্চিত্রের গানেই সমর্পিত করেন। বলছি সদ্য প্রয়াত গায়িকা শাম্মী আক্তারের কথা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সিনেমায় গেয়েছেন তিন শতাধিক গান। কালজয়ী হয়ে আছে তার গাওয়া অসংখ্য গান। যা আজও শ্রোতাদের মন মাতায়, দোলায়। শাম্মী আক্তার চলে গেলেন সব অনুভূতির সীমানা ছাড়িয়ে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গাওয়া তার কিছু জনপ্রিয় গান নিয়ে এই প্রতিবেদন…
আজিজুর রহমান পরিচালিত অশিক্ষিত ছবির মাধ্যমে গানে কণ্ঠ দেয়া শুরু করেন শাম্মী আক্তার। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা এবং সত্য সাহার সুর ও সংগীতে `আমি যেমন আছি তেমন রবো বউ হবো না রে’ ও `ঢাকা শহর আইসা আমার আশা পুরাইছে’ গান দুটির জনপ্রিয়তার কারণে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শাম্মী আখতারকে।
শিল্পীর কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হচ্ছে `বিদেশ গিয়া বন্ধু তুমি আমায় ভুইলো না’, `মনে বড় আশা ছিল তোমাকে শুনাবো গান’, `চিঠি দিও প্রতিদিন চিঠি দিও’, `ভালোবাসলেই সবার সাথে ঘর বাঁধা যায় না’, `আমার মনের বেদনা বন্ধু ছাড়া বুঝে না’, `আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী খোদার পরে তোমায় আমি বড় বলে জানি’,`আমার নায়ে পার হইতে লাগে ষোল আনা’ ইত্যাদি। এরপর প্রায় তিনশ গান গেয়েছেন তিনি।
রাজ্জাক-কবরী অভিনীত কাজল লতা সিনেমায় `এই রাত ডাকে এই চাঁদ ডাকে হায় তুমি কোথায়’ গানে কণ্ঠ দিয়ে তখন তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন শাম্মী আক্তার। এই গানে তার সঙ্গে দ্বৈতভাবে কণ্ঠ দিয়েছিলেন সুবির নন্দী। গানটির কথা লিখেছিলেন রফিকুজ্জামান ও সুর-সংগীত করেছিলেন নূরুল আলম। কাজল লতা পরিচালনা করেছিলেন মোস্তফা আনোয়ার।
মঙ্গলবার বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে ৬২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন শাম্মী আক্তার। গত বছর অক্টোবরে তার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছিল। শেষরক্ষা হলো না কিছুতেই। বুধবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে শাম্মী আকতারকে শাহজাহানপুর গোরস্থানে দাফন করা হবে।