ইংলিশ ফুটবলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বনাম আর্সেনাল দ্বৈরথ অন্যতম ঐতিহ্যপূর্ণ ম্যাচ। দু’দলের মুখোমুখিতে তৈরি হয় বাড়তি উত্তেজনা। বুধবার রাতেও যা আবারও প্রমাণিত। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে লিগে শেষ তিনটি ম্যাচে জয় ছিল না ম্যানইউর। অন্যদিকে সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ১৯ ম্যাচ অপরাজিত ছিল আর্সেনাল। পরে ম্যাচে গোল করলেও, জয় পায়নি কোনো দলই। অর্থাৎ, পয়েন্ট ভাগাভাগি। তবে নিজেদের ভুলের জেরেই গোল হজম করেছে দু’দল।
ম্যানইউ’র ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের আগুনে ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র হয়। ফলে টানা চার ম্যাচ জয়হীন হোসে মরিনহো রীতিমতো যাতাকলে।ম্যানইউ-আর্সেনালের ড্র’য়ের রাতে অবশ্য দুর্দান্ত জয় পেয়েছে লিভারপুল ও টটেনহ্যাম হটস্পার। তবে হেরে গেছে আরেক বড় ক্লাব চেলসি।
নিজেদের মাঠে চাপ রেখেই শুরু করে মরিনহোর শিষ্যরা। সুযোগ পেয়েছিলেন মার্কাস র্যাশফোর্ড। তার শট বাঁচান লেনো। ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে আর্সেনাল। ফল, ২৬ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে গোল করেন মুস্তাফি। এক্ষেত্রে ম্যানইউ গোলকিপার বল পুরোপুরি প্রতিহত না করার ফলে তা গোললাইন অতিক্রম করে।
পিছিয়ে পড়ে চাপ বাড়ায় ম্যানইউ। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ফ্রি-কিক থেকে আসা বল আর্সেনাল কিপার পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে না পারায় বলকে ফলো করে গোল করেন অ্যান্থনিও মার্শিয়াল। বিরতির আগে আর গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ দু’দলের। সুযোগ পেয়েছিলেন রোহো। কিন্তু তা থেকে বিপদ হতে দেননি আর্সেনাল গোলকিপার লেনো। ম্যাচে আবার লিড নেয় আর্সেনাল। ৬৮ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন লাকাজেত, বিপক্ষ খেলোয়াড়দের ভুলে। তিনি আক্রমণ তৈরি করলেও, রোহোর পায়ে প্রতিহত হয়ে গোলে ঢুকে যায়।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই ম্যাচে দ্বিতীয়বার সমতা ফেরায় ম্যানইউ। গোল করেন লিংগার্ড। এক্ষেত্রে আর্সেনাল খেলোয়াড়রা বল ঠিক মতো বিপদমুক্ত না করার ফলে সমতা ফেরায় হোম টিম। শেষদিকে চাপ বাড়ায় আর্সেনাল। সুযোগ পেয়েছিলেন অবামেয়াংরা, তবে বিপদ হতে দেননি ম্যানইউ কিপার ডেভিড ডি গিয়া।
অন্য ম্যাচে বার্নলির বিপক্ষে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে জেতে লিভারপুল। প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। ৫৪ মিনিটে জর্জ কর্কের গোলে প্রথম লিড নেয় বার্নলি। আট মিনিট পর (৬২মিনিট) সমতা ফেরার জেমস মিলনার। ৬৯ মিনিটে অলরেডদের লিড এনে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা বরর্তো ফিরমিনো। আর যোগ হওয়া সময়ে (৯০+১) ব্যবধান ৩-১ করেন সুইজারল্যান্ড স্ট্রাইকার জারদান শাকিরি।
লিভারপুলের মতোই ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে টটেনহ্যাম। ঘরের মাঠে তারা হারিয়েছে সাউদাম্পটনকে। দলের হয়ে একটি করে গোল করেন হ্যারি কেন, লুকাস মৌরা ও সন হিউং-মিন। সাউদাম্পনের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন চার্লি অউস্টিন।
বুধবার রাতে প্রিমিয়ার লিগে বড় ক্লাবগুলোর মধ্য শুধু হেরেছে চেলসি। উলভারহ্যামটনের কাছে তারা হেরেছে ২-১ গোলে। এছাড়া এভারটন-নিউক্যাসল এবং ফুলহ্যাম-লেস্টার সিটির ম্যাচ দুটি ১-১ গোলে ড্র হয়।
১৫ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ম্যানচেস্টার সিটি। সমানসংখ্যক ম্যাচে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইনম্বরে লিভারপুল। ১৫ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে টটেনহ্যাম। সমানসংখ্যক ম্যাচে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে চারনম্বরে চেলসি। আর্সেনালের পয়েন্ট চেলসির সমান হলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে তারা আছে পাঁচে। ১৫ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের আটনম্বরে মরিনহোর ম্যানইউ।