রাজধানীর সায়েদাবাদে একটি মোটর গ্যারেজে কাজ করত মেজবা, পরে মেজবা টায়ার শপ নামে নিজেই একটি মোটর গ্যারেজ চালু করেছিল। বিয়ের কিছুদিন পর জঙ্গি মেজবা তার স্ত্রীর কাছে স্বীকার করে যে, উগ্রবাদিতায় আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে।
মেজবার পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান চ্যানেল আই অনলাইনকে এসব জানান।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে রাজধানীর সায়েদাবাদে একটি মোটর গ্যারেজে কাজ নেয়। পরে যাত্রাবাড়ী জনপথ মোড়ে মেজবা টায়ার শপ নামে নিজেই একটি মোটর গ্যারেজ চালু করে। সে যাত্রাবাড়ী জনপথ মোড়ে অবস্থিত একটি মেস বাসায় বসবাস করত।
তিনি বলেন, কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ থানার বাদুয়ারা গ্রামের এনামুল হক ও তাহমিনা আক্তার দম্পতির ছেলে মেজবা। মেজবার বাবা মাওলানা এনামুল হক এবতেদায়ি মাদ্রসা শিক্ষক ছিলেন। এখন স্থানীয় এক মসজিদের মোহাদ্দেস হিসেবে কাজ করছেন। ৪ ভাইয়ের মধ্যে মেজবা বড়। এ ছাড়া ৩ বোন রয়েছে।
মেজবা গেল বছরের ২৮ মে পারিবারিকভাবে পার্শ্ববর্তী গ্রামের শারমিন আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের কিছুদিন পর জঙ্গি মেজবা তার স্ত্রীর কাছে স্বীকার করে যে সে উগ্রবাদিতায় আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেজবার স্ত্রী শারমিন র্যাবকে বলেন, বিয়ের পরই আমাকে পার্বত্য অঞ্চলের গহীন অঞ্চলে গিয়ে থাকার প্রস্তাব দেন তিনি। রাষ্ট্র বিরোধী নানা ধরনের কথা বলতেন স্ত্রীকে। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি শারমিন। এক পর্যায়ে হিযরতের জন্য একাই ঘর ছাড়ে মেজবা।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, পার্বত্য অঞ্চলের গহীন অঞ্চলে নতুন এই জঙ্গি গ্রুপটির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণে যাওয়ার সময় স্ত্রীকে সঙ্গে নিতে চেয়েছিল মেজবা। পরে একাই গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকেই পশ্চিম নাখাল পাড়ার ১৩/১ রুবি ভিলা নামের ৬ তলা বাড়িটি ঘিরে ফেলে র্যাব সদস্যরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৬ তলা বাড়িটির পঞ্চম তলায় কয়েকজন জঙ্গি সদস্য রয়েছেন বলে তারা জানতে পারেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাতে গেলে বাড়ির ভিতর থেকে গুলিবর্ষণ ও গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়। র্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুড়লে তিনজন নিহত হয় । এসময় দুই র্যাব সদস্যও আহত হন।
জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষে র্যাব জানায়, নিহত তিন জঙ্গি জেএমবির সদস্য। ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নাশকতা ও ধ্বংস করার পরিকল্পনা ছিলো তাদের। ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে এ মাসের চার তারিখে বাসা ভাড়া নিয়েছিলো তারা।