লিওনেল মেসি মুখচোরা, ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের উজ্জীবিত করার চেয়ে নিজেকে নিজের মধ্যেই লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করেন, মোটেও যোগ্য নেতা নন- আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে নিয়ে এমন অসংখ্য অভিযোগ আছে।
এমনকি মেসি অধিনায়ক হওয়ার পরও দলের অন্যদের যখন বোঝানোর কাজটা করতেন সাবেক ডিফেন্ডার হাভিয়ের মাসচেরানো তখন অনেকে আঙুল তুলেছেন মেসির দিকে। অভিযোগ করতেন, বার্সেলোনা তারকা আসলে পুতুল অধিনায়ক!
তবে সময় পাল্টেছে। মেসির তরুণ সতীর্থরা এখন অধিনায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যেমন জাতীয় দলে উদিনেস মিডফিল্ডার রদ্রিগো ডি পল বলছেন প্রয়োজনে মেসির নেতৃত্বে যুদ্ধে নামতেও প্রস্তুত তিনি।
২০১১ সালে দায়িত্ব পাবার পর আর্জেন্টিনার নেতৃত্ব তরুণ মেসির হাতে তুলে দেন তৎকালীন কোচ আলেহান্দ্রো সাবেয়া। ২০১৪ সালে মেসির নেতৃত্বেই বিশ্বকাপে রানার্সআপ হয়েছিলো লা আলবিসেলেস্তারা। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকাতেও এক ফল করে দলটি।
টানা তিন টুর্নামেন্টের ফাইনালে তুলেও শিরোপা জেতাতে না পারায় মেসির নেতৃত্ব নিয়ে হয়েছে বিস্তর সমালোচনা। বার্সার মেসি আর্জেন্টিনায় মলিন থাকার পেছনে নেতৃত্বকেও অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অনেকে।
ইনিয়েস্তার বিদায়ের পর ২০১৮ সালে ক্লাব বার্সেলোনার নেতৃত্বও চলে আসে মেসির হাতে। একইসঙ্গে ক্লাব আর জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব যে ছয়বারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকাকে নেতৃত্বে পরিণত করেছে তার প্রমাণ ২০১৯ কোপা আমেরিকা। টুর্নামেন্টে তৃতীয় হলেও দলের তরুণদের সব সমালোচনা থেকে আগলে রেখেছিলেন মেসি। বলেছিলেন এই দলটা নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন তার।
রদ্রিগো ডি পলও বলছেন মেসি এখন তাদের আদর্শ নেতা। দলকে নিয়ে তার খোলামেলা বক্তব্য তরুণরা সাদরেই গ্রহণ করে ফিফাকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ২৬ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
‘আপনি চাইলেই মেসির দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারবেন। যখন তার সঙ্গে কোনো মুহূর্ত ভাগাভাগি করতে চাইবেন তখন তার মন এতটাই স্বচ্ছ যে তাকে নিয়ে কার কী ভাবনা সেটা মন খুলেই বলে ফেলা যায়। চাইলে তাকে তার বাচ্চাদের নিয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন অথবা হয়তো একদিন তিনি নিজেই ভ্যালেন্সিয়া-বার্সেলোনা ম্যাচের স্মৃতি খুলে বসবেন।’
‘যখন মেসির মত কেউ আপনার অধিনায়ক তখন তার নেতৃত্বে অনায়াসেই যুদ্ধে নামা যায়।’
‘আসল বিষয়টা সবাই জানে যে কাকে কি করতে হবে, কেউ পত্রিকার শিরোনাম হতে চায় না। একমাত্র লিওই তার মত করে খেলেন। আমরা বাকিরা আমাদের করতে বলা হয় তাই করি।’
আর্জেন্টিনা দলে বড় কৌতুকবাজ হিসেবে পরিচিতি আছে ডি পলের। তবে এই মিডফিল্ডার বলছেন তিনি একাই নন, দলকে হাসাতে মেসিরও জুড়ি মেলা ভার।
‘অনেকেই আমাকে ভাঁড় বলে, এটা ঠিক না। হয়তো আমি কিছু বললাম আর বাকিরা তা লুফে নিলো। টুকু (রবার্তো) পেরেইরা, লিও পারাদেস এমনকি মেসিও তাতে যোগ দেন- কেবল আমি একাই নই।’