Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

মুন্ডুহীন মুরগি বেঁচেছিলো দেড় বছর!

আজ থেকে সত্তর বছর আগে আমেরিকার কলোরাডোতে এক চাষী তার খামারের একটি মুরগির শিরশ্ছেদ করেছিলো। তবে মুরগিটি তখন মারা যায়নি। শিরশ্ছেদের পরও আঠারো মাস বেঁচেছিলো। পরে ওই মুরগিটি ‘মাইক’ নামে বিখ্যাত হয়েছিলো।

মার্কিন মুলুকে ওই সময় খামারি লয়েড ওলসেন আর তার স্ত্রী ক্লারা প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশটা মুরগি জবাই করেছিলেন। কিন্তু তার মধ্যে একটা জেদি মুরগি ছিলো। মুন্ডু কাটা যাওয়ার পরও সে অন্যদের মতো নেতিয়ে পড়েনি, বরং অবিশ্রান্ত ছুটোছুটি করে চলেছিলো, কিছুতেই থামছিল না। অবাক হয়ে লয়েড ও তার স্ত্রী পুরনো একটি আপেলের বাক্স দিয়ে সে রাতের মতো মুরগিটি চাপা দিয়ে রাখেন। কিন্তু কী আশ্চর্য, পরদিন সকালেও সে মুরগিটি দিব্বি বেঁচেছিল।

এদিকে ঘটনার পরদিন যখন লয়েড নিজের মুরগিগুলো নিয়ে মাংসের বাজারে বেচতে যান, সঙ্গে তিনি ওই মুন্ডহীন মুরগিটাও নিয়ে গিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে মুন্ডুহীন মুরগির কথা চারপাশে ছড়িয়ে পড়লে, স্থানীয় খবরের কাগজ তাদের এক সাংবাদিককে লয়েড ওলসেনের সাক্ষাৎকার নিতেও পাঠায়।

সাংবাদিক তখন লয়েডকে প্রস্তাব দিলেন ওই মুরগি নিয়ে তিনি যদি শো করতে বেরোন, তাহলে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। যেই কথা সেই কাজ। প্রথমে সল্ট লেক সিটি, তারপর ইউনিভার্সিটি অব উটাহ্। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তো বিজ্ঞানীরা সেই মুরগিটিকে নানা পরীক্ষার মধ্যেও ফেললেন ওর বেঁচে থাকার রহস্যটা কী, তা বুঝতে।

প্রোমোটার হোপ ওয়েড ততদিনে ওই মুন্ডহীন মুরগিকে ‘মিরাকল মাইক’ নামে ব্র্যান্ড করে ফেলেছেন। বিখ্যাত ‘লাইফ’ ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকেও মিরাকল মাইকের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

লয়েড ও ক্লারা ওলসেন মাইককে নিয়ে ততদিন সারা মার্কিন মুলুক চষে বেড়াচ্ছেন। আর যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই মুন্ডহীন মাইককে দেখতে হইচই পড়ে যাচ্ছে। মাইককে তরল খাবার খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। আর ওলসেন দম্পতি একটা সিরিঞ্জে করে সেই খাবার সরাসরি তার খাদ্যনালীতে ঢেলে দিতেন।

একদিন ফিনিক্সের একটি মোটেলের ঘরে সেই খাদ্যনালীতে কিছু আটকেই দমবন্ধ হয়ে মাইকের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে মাইকের স্মৃতিতে এখন গত বেশ কয়েক বছর ধরে কলোরাডো-র ফ্রুটা-তে প্রতি বছরই হেডলেস চিকেন ফেস্টিভ্যাল আয়োজিত হচ্ছে।

Exit mobile version