মাদকের বিরুদ্ধে সবাই ঐকবদ্ধ অবস্থান নিলে নির্মূল সম্ভব: র্যাব ডিজি
সারাদেশে শিগগিরই মাদক বিরোধী সাঁড়াশী অভিযান
বাংলাদেশের মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তবেই দেশকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-৪ এর কার্যালয়ে ‘স্বাধিকার স্বাধীনতা ও স্বপ্নগাঁথা’ শিরোনামের শিল্পকর্ম উদ্বোধন করেন বেনজীর আহমেদ। ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা ধরে শিগগিরই সারাদেশে মাদক বিরোধী সাঁড়াশী অভিযান শুরু জবে জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন: মাদক নির্মূল করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিটের সমন্বিত উদ্যোগে আমরা এই অভিযান শুরু করবো। ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন: প্রতিবছরই র্যাব কোটি কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করছে। হাজারো মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তবেই দেশকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব।

জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে র্যাব ডিজি বলেন: জঙ্গিবাদ থেকে আমরা কখনও দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চাই না। যদিও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় জঙ্গিবাদ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবুও আমরা এতে তুষ্ট নই।
‘স্বাধিকার স্বাধীনতা স্বপ্নগাথাঁ’ শিল্পকর্ম প্রসঙ্গে র্যাবের ডিজি বলেন: স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আমরা যেসব পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছি, তার সবকিছুই এই শিল্পচিত্রের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্বাধীনতার ইতিহাস ধারণের কাজ করবে। অপরপাশে যে ম্যুরাল চিত্রটি রয়েছে, সেটিতে র্যাবের সকল কার্যক্রম ফুটে উঠেছে।
‘দুটি শিল্পকর্মই অনেক ভালো হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন, তাৎপর্যপূর্ণ ও ম্যাসেজ সম্পন্ন হয়েছে।’
নরম সবুজ ঘাসের গালিচায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের পদচারণা আর গাছের ডালে বসে থাকা দোয়েল পাখি, সব মিলিয়ে যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার এক গৌরবময় ‘স্বপ্নগাথাঁ’ এই শিল্পকর্মটি। আর তাই র্যাব এই শিল্পকর্মটিকে আখ্যা দিয়েছে ‘স্বাধিকার স্বাধীনতা স্বপ্নগাথাঁ’।
এই স্বপ্নগাথাঁকে সুরক্ষা করতে চতুঃপার্শ্বে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কালো পোশাকে র্যাব ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ মন্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
র্যাব কর্তৃক স্থাপিত স্বাধিকার স্বাধীনতা ও স্বপ্নগাঁথা শিল্পকর্মটি ছোট পরিসরে ৪৭ এর দেশভাগের পর হতে অনেক বন্ধুর ও কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে আজকের বাংলাদেশ হয়ে ওঠার এক অনন্য শিল্পিত গৌরব গাঁথা। এই শিল্পকর্মটির মূল টেরাকোটা চিত্র। এর দৈর্ঘ্য ১৮ ফিট ও প্রস্থ ৫ ফিট। পুরো টেরাকোটা চিত্রটি তৈরি হয়েছে বিশেষ ধরনের এঁটেল মাটি ও বেলে দোআঁশ মাটির সংমিশ্রণ স্টোন ওয়্যার ফায়ারিংয়ের মাধ্যমে। সমগ্র টেরাকোটা চিত্রটিকে দ্বিমাত্রিক অবয়বে ত্রিমাত্রিক আবহয়ের চিত্রিত করা হয়েছে। ধর্মীয় দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই নানা রকম বৈষম্যমুলক নীতি নিপীড়ন, নির্যাতন আর দুঃশাসনের শিকার হয় বাংলার জনগণ। জিন্নাহর কালো হাতের হিংস্র থাবায় বাঙালী জাতির কণ্ঠরোধ করে দিয়ে বোবা বানিয়ে দেয়ার হীন চেষ্টাকে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল রফিক, বরকত, সালাম, জব্বার আরও অনেকে। সেই সাথে স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা।
তারই ধারাবাহিতায় ৬ ছয় দফা, ৬৯ এর গণ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালীর মুক্তি সনদ ২৫ শে মার্চের কালো রাত ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয়ের অর্জন।
টেরাকোটা চিত্র ও ম্যুরালটি তৈরি করেছেন চিত্রশিল্পী শরীফুল ইসলাম সবুজ। আর টেরাকোটা চিত্রটির পৃষ্ঠপোষক ও নামকরণ করেছেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (ডিআইজি) খন্দকার লুৎফুল কবির।
এছাড়া র্যাব-৪ এর সকল কর্মকর্তা এই কাজটি সম্পন্ন করতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন।