
মডার্না এবং ফাইজারের দুটি করোনা ভ্যাকসিনের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এতে করে বছরের শেষের দিকে নিয়ন্ত্রকের অনুমোদনের এবং ব্যাপক ব্যবহারের পথ পরিষ্কার হবে।
সোমবার দুটি প্রতিষ্ঠানই তাদের পরীক্ষণের কথা ঘোষণা করে। দুটিই প্রথম সর্বশেষ ধাপের পরীক্ষণে আছে। এসব পরীক্ষণ ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থনে চলছে। একটি কার্যকর টিকা মহামারীটি শেষ করতে সহায়তা করবে বলেই আশাবাদ যোগাচ্ছে এসব খবর।
চূড়ান্ত পরীক্ষণের খবর আসার পরই মডার্নকার স্টক বেড়েছে ৯ শতাংশ, ফাইজারের ১.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর অংশীদার বায়োএনটেক, যারা ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে, তাদের ৪.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুটি ভ্যাকসিন তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানই একটি নতুন প্রযুক্তির উপর নির্ভর করছে যেটা ঐতিহ্যবাহী ভ্যাকসিন উৎপাদন পদ্ধতির তুলনায় দ্রুত বিকাশ এবং উৎপাদনযোগ্য। কিন্তু এর বিস্তৃত ট্র্যাক রেকর্ড নেই।

এই পদ্ধতিতে তথাকথিত এমআরএনএ বা সিন্থেটিক মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অনুকরণ করে করোনভাইরাসকে শনাক্ত এবং নিরপেক্ষ করতে শেখায়।
এর আগে মডার্না কখনও ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করেনি। তারা মার্কিন সরকার থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তার অপারেশন র্যাপ স্পিড প্রোগ্রামের আওতায় বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন প্রার্থীদের অর্থের যোগান দিয়ে সহায়তা করছে।
যদি কার্যকর ভ্যাকসিন পাওয়া যায় তাহলে ২ বিলিয়ন ডলারে ৫০ মিলিয়ন মানুষের জন্য ভ্যাকসিন সরবরাহে মার্কিন সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছ ফাইজার।
বিশ্বে দেড় শতাধিক করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছেন, প্রায় দুই ডজন সম্ভাব্য ভ্যাকসিন ইতিমধ্যে মানব পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।
মডার্নার বৃহত্তর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ঘোষণা দিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস(এনআইএইচ) ডিরেক্টর ফ্রান্সিস কলিন্স এক বিবৃতিতে বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন বিতরণ করা একটি প্রসারিত লক্ষ্য, তবে আমেরিকান জনগণের পক্ষে এটি সঠিক লক্ষ্য।
এই ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং কার্যকর হলে মডার্নার কয়েক মিলিয়ন ডোজ প্রস্তুত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন কলিন্স।
ফাইজার বলেছে, যদি পরীক্ষাটি সফল হয়, তবে তারা অক্টোবরের সাথে সাথেই নিয়ন্ত্রকের অনুমোদন চাইতে পারে এবং বছরের শেষের দিকে ৫ মিলিয়ন রোগীর জন্য দুটি ডোজ দিয়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারে।
মডার্নার চিফ এক্সিকিউটিভ স্টিফেন ব্যানসেল জানিয়েছেন, ২০২১ সালের শেষ নাগাদ ফাইজারের লক্ষ্য ছিল প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ডোজ এবং মডার্নার লক্ষ্য ২০২১ সাল থেকে এক বছরে ৫০০ মিলিয়ন -১ বিলিয়ন ডোজ।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ কর্মকর্তা অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, মডার্না ট্রায়াল থেকে একটি ফলাফল নভেম্বরের মধ্যে বা তারও আগে আসতে পারে। ছোট ছোট পরীক্ষাগুলির তথ্য দেখে তিনি ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিয়ে ‘বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন নন’। এসব ট্রায়াল সম্পর্কে অবগত আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।