নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের মামলার আসামি স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ মেম্বারকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোম্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এই জামিন আদেশ দেন। আদালতে আসমিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অজি উল্লাহ। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
আসমি পক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, ‘সোহাগ মেম্বার ওই ঘটনায় সরাসরি জড়িত ব্যক্তি নন। তবে এলাকার মেম্বার হিসেবে ভিকটিম তার কাছে ঘটনাটি জানান। কিন্তু আসামি সোহাগ মেম্বার এবিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি বলে পুলিশ দণ্ডবিধির ২০২ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। যে ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মাত্র ছয় মাস। যেখানে আসামি ৩ মাস হল কারাগারে রয়েছেন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘নারীকে নির্যাতনের ওই ঘটনাটি ৭১ এর নির্যাতনের ঘটনাকে হার মানায়।’

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ঘরে ঢুকে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, ধর্ষণের চেষ্টা ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় একদল অপরাধী। এরপর গত ৪ অক্টোবর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে ওই নারী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলাগুলোর তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়।
এরপর নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। সেই ১৪ জনের মধ্যে জামাল উদ্দিন, আবদুর রব ওরফে চৌধুরী মিয়া, মিজানুর রহমান তারেক ও মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ পলাতক। আর দেলোয়ার হোসেন দেলু, নূর হোসেন বাদল, মো. আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাইন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন ওরফে সুমন, নূর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে সোহাগ মেম্বার কারাগারে রয়েছেন।
এই মামলার দুই আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।