হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুনের মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ঢাকার মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারককে তলব করা হয়েছে।
আগামী বুধবার এই বিচারককে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে। এবং এইদিন ওই আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কেও হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়।
এছাড়া এ মামলার অন্য আসামি জুলহাস মিয়া মারা গেছেন কিনা সে বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। আর রাবেয়া খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্র আদালতে জমা দিতে বলা হয়।
বুধবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মোহাম্মদ রিয়াজউদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন। এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম নোবেল। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাহিদ সরওয়ার কাজল।
আদালতের আদেশের পর রাবেয়া খাতুনের কাছে তার বয়স জানতে চাইলে তিনি বলেন: ‘আমার বয়স ১০৪। তবে ভোটার আইডিতে ৯০ হবে মনে হয়।’
‘অশীতিপর রাবেয়া: আদালতের বারান্দায় আর কত ঘুরবেন তিনি?’ শিরোনামে গত ২৫এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সে প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম নোবেল গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট রাবেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে থাকা মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করে মামলার নথি তলব করেন। সেই সাথে নিম্ন আদালতে থাকা মামলাটি কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। এরপর গত ১৫ মে হাইকোর্ট এক আদেশে রাবেয়া খাতুনকে আদালতে উপস্থিত করতে রিটকারি আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। সে ধারাবাহিকতায় আজ রাবেয়া খাতুন আদালতে হাজির হন। অন্যদিকে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও এ মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার বিষয়টি মামলার নথিতে পেয়ে হাইকোর্ট আজ তলব আদেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বলা হয়েছে: অবৈধ অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে তেজগাঁও থানার এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে রাবেয়া খাতুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন ২০০২ সালের ২ জুন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ছয় মাস কারাগারে থেকে জামিন পান তিনি। ২০০২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ১২ জনকে সাক্ষী করে রাবেয়াসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ শুরু হয় মামলার বিচার। এ মামলা থেকে মুক্তি পেতে ঢাকার আদালতে ১৮ বছর ধরে ঘুরতে থাকেন বৃদ্ধা রাবেয়া।