শোনা যাচ্ছে, উঠতি গায়ক সৈয়দ অমিকে বিয়ে করছেন চিত্রনায়িকা আঁচল। এও শোনা যাচ্ছে, বিয়ের পর তিনি অভিনয় ছাড়বেন। বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করলেও অভিনয় ছাড়ার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করলেন আঁচল। বিয়ে, ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্তত দেড় ডজন সিনেমার এই নায়িকা মন খুলে আলাপ করলেন চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে…
আপনার বিয়ে ও মিডিয়া ছাড়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খবর দেখছি। বিষয়গুলো স্পষ্ট করলে আপনার দর্শকদের জন্য সুবিধা হয়…
আগামী বছর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যার সঙ্গে বিয়ে করতে চাই তার মা মাস তিনেক আগে কোভিডে মারা গেছেন। এখনও সেই শোক কাটেনি। সেজন্য আগামী বছর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া। তবে নির্দিষ্ট করে কোনো দিন ঠিক করিনি। অভিনয় ছাড়ার প্রশ্নই আসেনা। কোনো নায়িকা সারাজীবন অভিনয়ও করে না। সবকিছু পরিস্থিতি বলে দেবে। কয়েক জায়গায় নিউজ দেখলাম, বিয়ের পর সিনেমা থেকে বিদায় নেব। কিন্তু আমি কোথাও বলিনি বিয়ের পর মিডিয়া ছেড়ে দেব। হজ করার ইচ্ছে প্রতিটি মুসলমানের থাকে। বাবা মাকে পাঠানোর ইচ্ছে ছিল। বিয়ের পর আমারও ইচ্ছে আছে নতুন পরিবার নিয়ে হজে যাবো।
বিয়ের সিদ্ধান্ত নিজের পছন্দে নাকি পারিবারিকভাবে?
নিজের পছন্দের পাশাপাশি পরিবারের সম্মতি আছে। এখন শুধুমাত্র বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাদগান বা অন্যকোনো আয়োজন হয়নি। তাহলে আসল ঘটনা বলি। গত রোযার আগে অমির মা যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। দেখতে গিয়েছিলাম। আগেই সে আমার কথা তার পরিবারকে জানিয়েছিল। প্রথমবার দেখা করতে গেলে অমির বাবা আমাকে স্বর্ণের চেইন গলায় পরিয়ে দেন। এটাই তার পরিবার থেকে পাওয়া প্রথম উপহার।
গুঞ্জন শোনা যায়, বছর তিনেক আগে বিয়ে করে একবার ঢাকা ছেড়েছিলেন। এমন গুঞ্জন কেন উঠলো?
বিয়ের ঘটনা আমার জীবনে আগে কখনও ঘটেনি। ২০১৭-১৮ সালে ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খুব খারাপ ছিল। আমারও কাজ কম হচ্ছিল। তাই ঢাকায় না থেকে সেই সময় গ্রামের বাড়িতে থাকতাম। তবে আমার বিয়ে শাদির কোনো ইস্যু ছিল না।

ক্যারিয়ার নিয়ে আপনি নাকি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন?
‘ইয়াং স্টার’ নামে আমাদের কয়েকজনের একটি গ্রুপ ছিল। ইন্ডাস্ট্রির সবাই জানেন। দুই বছরের মতো আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব ছিল। হঠাৎ ব্যক্তিগত ইস্যুতে গ্রুপটা ভেঙে যায়। লকডাউনে ছয়মাসের মতো ঘরে বসে ছিলাম। এটা নিয়ে কিছুদিন ডিপ্রেশনে ছিলাম। তবে অনেক বেশি জটিল কিছু না।
আপনি দাবী করেছিলেন, বিভিন্নভাবে রাজনীতির স্বীকার হয়েছেন। এখনও তাই অনুভব করেন?
রাজনীতিতে আমি শুরু থেকে পড়ে আসছি। এরপরেও এখনও কাজ করে যাচ্ছি এটাই বড় ব্যাপার। আমার কোনো ব্যাক-আপ বা সাপোর্ট নেই। সামনে এগিয়ে যেতে সাপোর্ট দেবে তেমন কেউ নেই। যতটুকু পেরেছি আল্লাহর রহমত ও নিজের যোগ্যতায়। সেই ২০১১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলো সিনেমা করেছি, সবাই আমাকে ডেকে নিয়েই কাজ দিয়েছেন। আমি কারও পিছনে ঘুরিনি। পরিচালক প্রযোজক একজনকেও বলি নাই, আমাকে সিনেমায় নেন। হয়তো এজন্য বড় কাজগুলো করতে পারিনি। বড় কাজ করতে গেলে বড় বড় মানুষ লাগে, হয়তো কাউকে বলিনি বলে তারা আমার পাশে নেই। এটা নিয়ে আমি কখনও আফসোস করিনা। দেশের পাশাপাশি প্রবাসীরা আঁচল নামে বাংলাদেশি একজন নায়িকা আছে এইটুকু জানেন। এতে আমি খুশি।
আপনার কতগুলো সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে?
আয়না, চিৎকার, কাজের ছেলে, কর্পোরেট, যমজ ভূতের গল্প .. আরও সবমিলিয়ে নয়টি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। কাজগুলো মোটামুটি তৃপ্তি দিয়েছে। এরমধ্যে বোবার চরিত্রসহ ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র পেয়েছি। মনতাজুর রহমান আকবরের মতো গুণী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করলাম। ডিপজল ভাই তো আছেনই। সবমিলিয়ে কাজগুলো নিয়ে দারুণ প্রত্যাশা।
সিনেমায় ভবিষ্যৎ দেখতে পান?
সিনেমা থেকে আমার চাওয়া, একটা ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড চাই। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে যখন পাবো মনে করবো আমি সফল। সিনেমায় এসে অনেক কষ্ট করছি, পরিবার আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। একটা ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেলে নিজেকে স্বার্থক মনে করবো। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে সবার সহযোগিতা পাবো। সবার দোয়া সঙ্গে নিয়ে সামনে এগুতে পারবো।
