
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রিয় ক্যাম্পাসে বন্ধু, সহপাঠী, শিক্ষকসহ হাজারো মানুষের অংশ গ্রহণে মাহমুদ হাবিব হিমেলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার নানা বাড়ি নাটোরে।
বুধবার সকালে হাসপাতাল থেকে তার লাশ আনা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ মিনারের মুক্তমঞ্চে রাখা হয় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
এরপর ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হিমেলের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে লাশ তার নানা বাড়ি নাটোরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।
হিমেলের মরদেহের সাথে তার মা ও মামার সঙ্গে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

নিহতের জানাজার আগে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও নিহতের আত্মীয়-স্বজনের উদ্দেশে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করবে। এখন এককালীন ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে হিমেলের পরিবারকে।
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের সকল দাবি দাওয়া মেনে নেয়া হবে। এছাড়াও হিমেলের মায়ের সকল দায়িত্ব নিবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার আর কী কী সাহায্য প্রয়োজন তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স কমিটির সাথে আলোচনা করা হবে।
নিহত হিমেলের মামা মুন্না বলেন, হিমেল অল্প বয়সে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলো। স্বামী-সন্তান হারা এই মায়ের এখন কি হবে? কে এই কষ্ট বুঝবে? কী অবলম্বন নিয়ে সে ঘুরে দাঁড়াবে?
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিক ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন ভবনের সামগ্রী আনার কাজ ব্যবহৃত ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারান মোটরসাইকেলে থাকা হিমেল। সে সময় আহত হন আরও দুইজন। নিহত হিমেল গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের কাজে নিয়োজিত ৬টি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও সেখান রাখা যন্ত্রপাতি ও ঘরে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীর আরেক অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বেশকিছু দাবিও তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, নিহতের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের অপসারণ, নিহতের পরিবারের একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা এবং ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা।
পরে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপাচার্য এসে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।