
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত মন্ত্রী সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর-গোয়াইন ঘাট-কোম্পানিগঞ্জ) আসনের ৬ বারের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ ১৯৪৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভারতের আম্বালায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ক্যাপ্টেন রশিদ আহমদ এবং মাতা কমরুন নেছা। ইমরান আহমদ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এবং ১৯৬৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিষয়ে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ সালে জেমস ফিনলের চা বাগানে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি শ্রীপুর টি গার্ডেন নামে নিজের চা বাগান পরিচালনা করছেন।
তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও জনসেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত আছেন। ইমরান আহমদ তৃতীয় (১৯৮৬), পঞ্চম (১৯৯১), সপ্তম (১৯৯৬) , নবম (২০০৮), দশম (২০১৪) এবং একাদশ জাতীয় সংসদ (২০১৮) নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। সপ্তম জাতীয় সংসদে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নবম জাতীয় সংসদে লাইব্রেরি কমিটি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। দশম জাতীয় সংসদে তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনকালীন সময় মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন।
তার সক্রিয় উদ্যোগে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বাংলাদেশের একমাত্র ইলেক্ট্রনিক সিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। ইমরান আহমদ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি রাংপানি ক্যাপ্টেন রশিদ হাইস্কুল এন্ড কলেজ, ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজ, গোয়াইনঘাট ইমরান আহমদ বালিকা বিদ্যালয় এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইমরান আহমদ কারিগরি কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা।
এছাড়াও তিনি গোয়াইনঘাট সরকারি ডিগ্রি কলেজ, জৈন্তাপুর ডিগ্রি কলেজ, সারিঘাট উচ্চ বিদ্যালয়, সালুটিকর কলেজ, আলীরগাঁও কলেজ, হাজী সোহরাব আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রুস্তমপুর কলেজ এবং হযরত শাহজালাল (রহ.) ডিগ্রি কলেজে দাতা সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। তিনি বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ও উর্দূ ভাষায় দক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রুনাই ও জাপান সফর করেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময় সরকারিভাবে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা, যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, চীন, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ত্রিনিদাদ, যুক্তরাজ্য, আজারবাইজান, উগান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া, ক্যামেরুন, সুইজারল্যান্ড, কলম্বিয়া, হল্যান্ড এবং মালয়েশিয়া সফর করেছেন। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে ভূটান, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা এবং দুবাই সফর করেছেন। দেশ ভ্রমণ ছাড়াও সমাজসেবা তার অন্যতম শখ। বিবাহিত জীবনে ইমরান আহমদ এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। তার স্ত্রী ড. নাসরিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বর্তমানে নাসরিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

সম্প্রতি জাহিদ নেওয়াজ খানের পরিকল্পনা, রাজু আলীমের প্রযোজনা ও সোমা ইসলামের উপস্থাপনায় চ্যানেল আই টু দ্য পয়েন্ট অনুষ্ঠানে সমসাময়িক অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বলেন তিনি।
প্রশ্ন: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেড় কোটির মত শ্রম শক্তি আছে আমাদের। বিজয়ের ৪৮ বছরে এসে আমাদের অর্জন অর্থনীতিতে স্বয়ংসম্পুর্ণতা। কিন্তু মাঝে মধ্যে প্রবাসীদের কিছু বিষয় নিয়ে সংকট তৈরী হয়। এই সব থেকে উত্তরণে আপনারা কী ভাবছেন? ইমরান আহমেদ: বিজয়ের মাসে আজকে যারা প্রবাসে আছেন তাদের পক্ষে কিছু কথা বলার সুযোগ পেলাম। বড় কথা হলো- উনারা যারা প্রবাসে আছেন- তারা দেশে কী সাহায্য করছেন? অথবা দেশের উন্নয়নে উনাদের কী ভুমিকা আছে। এটা হলো আমাদের জন্যে সবচেয়ে বড় জিনিস। আজকে যদি আমরা হিসাব করি গত বছরের ১৬ পয়েন্ট চার বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স হিসাবে আমাদের দেশে এসেছে। এটা কিন্তু বাস্তব। কিন্তু অন্য দিকে আমরা এটাও জানি- অনেক টাকা যা নরমাল চ্যানেলে আসার কথা কিন্তু তা হুন্ডির চ্যানেলে আসে তা কিন্তু আমাদের হিসাবে আসছে না। এই বছর প্রধানমন্ত্রী একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, যারা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে আমাদের এখানে টাকা পাঠাবে তাদেরকে আমরা ২ শতাংশ প্রণোদনা দেবো। আমরা আশা করছি বছরের শেষে এই ১৬ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে ২১ বিলিয়ন ডলার। এই ধারাবাহিকতা যদি আমাদের ঠিক থাকে- আশা করি হুন্ডিতে যে টাকাগুলো আসে এই সব টাকা যদি বৈধ চ্যানেলে আসে আমরা কিন্তু ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে চলে যাব আমাদের এই শ্রম বাজার থেকে।
প্রশ্ন: যারা এই বিশাল অংকের রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে কিছু দিন পর পর কেন তাদের কান্নায় বিচলিত হতে হয় রাষ্ট্রকে? কয়েকদিন আগে সৌদিতে যে ঘটনা ঘটে গেলো- তা তো মর্মস্পর্শি?
ইমরান আহমেদ: প্রবাসীদের কান্নার সাথে আমিও কাঁদি। এটাই কিন্তু বাস্তব।
বিজ্ঞাপন
প্রশ্ন: সবাই মিলে এই যে কান্না তা থামানোর জন্যে কী করছেন আপনারা?
ইমরান আহমেদ: আমরা কী করেছি? এর আগে আপনাকে একটা প্রশ্ন করি। ধরেন- গত দুই সপ্তাহে কান্নাকাটি এবং ফেরত প্রবাসী কয়জন পেয়েছেন? আপনারা মিডিয়ার সাথে আছেন। এর আগে তো প্রতিদিন ৫০ জন, ৩০ জন, ১০০ জন এবং ৯০ জন করে আসছিল না? কিন্তু এই নভেম্বর মাসের শেষ থেকে প্রতিদিন আপনারা কয় জন পাচ্ছেন?
প্রশ্ন: সাময়িকভাবে হয়তো কান্না ধামিয়েছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে যে এই কান্না আরও বাড়বে না- সেই বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাই।
ইমরান আহমেদ: এই কান্না বন্ধ হয়েছে তার কারণ হলো- আমাদের মন্ত্রণালয়ে যিনি সচিব আছেন তিনি একটা ডেলিগেশন নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।
প্রশ্ন: ২৬ তারিখে বৈঠক হয়?
ইমরান আহমেদ: হ্যাঁ। তাহলে তো আপনি সবই জানেন। ২৬ এবং ২৭ তারিখে দুইদিন বৈঠক হয়। এই বৈঠকের ফলে এই মানুষ ফেরত আসা কিন্তু বন্ধ হয়েছে।
প্রশ্ন: মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিকদের যৌন দাসীর পরিণতি যদি হয় তাহলে কেন তাদেরকে আমরা অদক্ষ হিসেবে বিদেশে পাঠাই? এর বিকল্প বাজার কেন তৈরী করছি না আমরা? কেন নারীদের মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হবে- যেখানে তারা এতো নির্যাতনের শিকার হয়?
ইমরান আহমেদ: আপনারা খুশি হবেন এটলিস্ট একটা তথ্য নিয়ে- নারী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে এমনকি জর্ডানে কিন্তু পাঠাচ্ছি। হাজার হাজার নারী জর্ডানে গিয়ে ওখানে কিন্তু তারা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করছে। সেখানে কিন্তু কোন সমস্যা নাই। নারী শ্রমিক আমাদের মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন দেশে গেছে। সেখানেও কিন্তু কোন সমস্যা নাই। সমস্যা শুধু সৌদি আরবে। তাই আশা করি- যে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি এটার সমস্যার সমাধানও হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপরে যে কঠোর নির্যাতন চলে তা বন্ধে তাদের উপরে কঠোর চাপ প্রয়োগ করা কি সম্ভব হবে?
ইমরান আহমেদ: হয়তো আমাদের শক্তির চাপ নাই। কিন্তু নারী বন্ধ করে দেওয়ার চাপ তো আছেই? যদি এমন অবস্থা হয় যে, আমরা দেখি আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না সমস্যার। তো- বন্ধ করার পথ তো আমার কাছে আছে।
প্রশ্ন: বন্ধ করলে তো নতুন বাজার তৈরী করতে হবে।
ইমরান আহমেদ: ওই যে বললাম আপনাকে জর্ডান তো একটা আছেই। আর এই মুহুর্তে আমরা নতুন নতুন বাজার খুঁজছি- জাপান বিরাট একটা বাজার খুলেছে। চায়নাতে আমরা বাজার খুলতে যাচ্ছি। সবকিছু রেডি হয়ে গেছে। যে কোন সময় আপনারা পেপারে নিউজ দেখবেন।কম্বোডিয়াতে আমরা পাঠিয়েছি। ভিয়েতনামে আমরা পাঠিয়েছি। থাইল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। আজকে উগান্ডা নিয়ে কথা হয়েছে। সুদান নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি। আর ইস্ট ইউরোপের সবাই চলে গেছে বেস্ট ইউরোপে। সেখানে ফ্যাক্টরি সব খালি পড়ে আছে। ওখানে রোমানিয়া বলেন- ক্রোয়েশিয়া, পোল্যান্ড এবং জার্মানি সব জায়গায়- উই অ্যাসাইন পিপল এবং থ্রু দ্যা অ্যাম্বাসি তাদেরকে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। মরিশাসে ডিসেম্বরে না পারলে জানুয়ারিতে আমরা গিয়ে সাইন করে আসবো। মালদ্বীপে কিন্তু আমাদের অনেক শ্রমিক আছেন। অনেকে ইলিগ্যালি আছেন কিছুটা লিগ্যালি আছেন। তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি ।
প্রশ্ন: সব দেশে যেতে হলে তো দক্ষ জনবল দরকার? সেই দক্ষতা উন্নয়নে কী করছেন আপনারা?
ইমরান আহমেদ: আমি এবার মন্ত্রী হলাম। আমাদের ৭০টি টিটিসি বলয় আছে। প্রতিটা জেলায় আছে। আর ৬টি মেরিট টিটিসি আছে। এর সাথে সাথে আগে থেকে যেটা চলমান ছিল তার সাথে ৪০টি আরও নতুন টিটিসি আমরা করছি। এই ৪০টির বাইরে আরও ৬০টি টিটিসির ডিপিপি আমরা রেডি করেছি। যে কোন সময় আমরা পাঠিয়ে দেবো একনেকে অ্যাপ্রুভালের জন্যে। কথা হলো আমি কমিটেড এবং এই সরকারও কমিটেড যে, প্রতিটি উপজেলাতে আমরা একটা করে টিটিসি করবো। আর মেয়েদের জন্যে বিশেষ করে সারাদেশে অনেক নার্সিং স্কুল আছে। সরকারি কম আছে কিন্তু বেসরকারি অনেকগুলো আছে। এদের সবাইকে যদি এক নেটওয়ার্কে নিয়ে আসতে পারি তাহলে দক্ষতার ব্যাপারে বিরাট উন্নতি হবে। আমাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তাদের ট্রেনিং যাতে ঠিকমতো হয়।
প্রশ্ন: বিজয়ের মাসের এই সময়ে প্রবাসের সবার জন্যে আপনি কী বার্তা দিতে চান?
ইমরান আহমেদ: প্রবাসে আমার ভাই বোন যারা আছেন- আসলে আমার যে বয়স বেশির ভাগই তো ভাতিজা ভাতিজি বলা যায়। আপনাদের সবাইকে আমি কমিটমেন্ট দিতে পারি। আমি আমার ব্যক্তিগত কমিটমেন্ট বা শেখ হাসিনা সরকারের কমিটমেন্ট বলি- তাদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্যে তাদের যা কিছু পাওনা দেনা আছে তা যেনো তারা পেতে পারেন এর জন্যে যতো কিছু প্রয়োজন আছে আমরা তা করতে রাজি আছি এবং করছি। আমি মন্ত্রী হওয়ার পরে প্রতিটি অ্যাম্বাসিতে আমার পার্সোনাল ই মেইল দেয়া হয়েছে। যাতে কেউ যদি অসুবিধায় পড়েন তাহলে সরাসরি আমাকে ই মেইল পাঠাতে পারেন। আর আমি খুশি হয়ে বলতে পারি আমার পার্সোনাল ই মেইলে যতো মেইল আসে সমস্যা নিয়ে আমরা সবগুলোর উত্তর দেই। তারা দেশের জন্যে যে ত্যাগ স্বীকার করেন আমি আমার তরফ থেকে বলতে পারি তাদের জন্যে আমি কিন্তু ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি আছি।
প্রশ্ন: যাবার সময়ে যারা প্রতারিত হন- সেই সব প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দেওয়া বা ব্ল্যাক লিষ্ট করা হয় কখনো?
ইমরান আহমেদ: খবর রাখেন না?
প্রশ্ন: খবর রাখি কিন্তু বিভিন্ন সূত্র ধরে তারা কিভাবে পার পেয়ে যায়?
ইমরান আহমেদ: না। এটলিস্ট আমার আসার পরে যারা যারা এটাতে ধরা খেয়েছে ১৬৪ জনের সার্ভার লক করা আছে। আর সাড়ে তিন কোটি টাকা ফাইনও করা হয়েছে। তিনটার লাইসেন্সও ক্যানসেল করা হয়েছে। তাদেরকে তো আমি আর কাজ করতে দেইনি।
প্রশ্ন: কেউ মারা গেলে তাদের পোস্ট মর্টেমের ব্যাপারে আপনারা কী কিছু করেন?
ইমরান আহমেদ: যেখানে ডেড হয় ময়না তদন্ত কিন্তু ওখানেই হয়। যতো জন আন ন্যাচারাল ডেথ হয়েছে তাদের পোস্ট মর্টেম কিন্তু ওখানে হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো- এই পোস্ট মর্টেম আসল নাকি নামকা ওয়াস্তে।
প্রশ্ন: তাদের মৃত্যুর কারণ স্বজনরা জানতে পারে- সেই জন্যে?
ইমরান আহমেদ: আমাদের যারা লেবার উইংয়ে আছেন এবং অ্যাম্বাসির যারা আছেন- আমরা তাদেরকে ইনভলভ করছি যাতে ওখানে যে পোস্ট মর্টেম হয় তা ঠিকমতো হয়েছে কিনা জানা যায়?
প্রশ্ন: লেবার উইং নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে প্রবাসীদের যে, তাদের অসময়ে এদের কাউকে তারা পাশে পান না।
ইমরান আহমেদ: কথা দুইটা। অ্যাম্বাসিতে কিন্তু শুধু লেবার উইং এর কাজ না। আরও অনেক কাজ আছে। এখন কেউ যদি পাসপোর্ট নিয়ে নবায়নের জন্যে যায় তা কিন্তু কনস্যুলার উইংয়ের কাজ। তা কিন্তু আমাদের কাজ না। কিন্তু কেউ যদি বলে- আমার পাসপোর্ট পেতে দেরী হয়েছে কিন্তু আমি লেবার উইংয়ের কাউকে পেলাম না- তা কিন্তু আনফেয়ার হয়ে যায়। ইকনোমিক উইং যদি তাদের কাজ না করে তাদের দোষ কিন্তু আমাদের উপরে আসা উচিত না। কয়েকদিন আগে কুয়েতে একটা ভাইরাল ভিডিও বের হলো যে, একজন প্রবাসীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। কিন্তু এটা লেবার উইংয়ের কেউ ছিল না, তা কিন্তু কনস্যুলার উইংয়ের কেউ ছিল। কিন্তু যেহেতু প্রবাসী তাই দোষ পড়ে গেছে যে, এটা আমরা আমরা করছি। সুযোগ পেলে একটা প্রশ্ন করেন যে, কী সাবজেক্ট নিয়ে এই লাঞ্ছিত হলো? দেখবেন লেবার উইংয়ের মানুষ তার সংখ্যা খুব কম। আমাদের ২৯টা পয়েন্ট আছে। সব জায়গায় নাই। এক জায়গায় একজন আছে না হলে ২ জন আছে মানে অফিসিয়াল লেভেলে। আর হয়তো পিয়ন লেভেলে দুই এক জন থাকতে পারে কিন্তু মূলত লেবার কাউন্সিলর একজন এবং ফার্স্ট সেক্রেটারী একজন এই দুইজন মূলত থাকে। কিন্তু এখন কুয়েতে একজনও নাই। যেহেতু আমরা শর্টে আছি। আমরা কিন্তু রিক্রুটমেন্ট আরও করছি এবং এটাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমাদের লোকাল খরচ থেকে সাময়িকভাবে যে জায়গায় দরকার প্রেশার বেশি দুই বা তিনজন করে এক্সট্রা মানুষ লোকালি হায়ার করেছি। যাতে করে যে কোন সমস্যা তারা লোকালি হ্যান্ডেল করতে পারে।
প্রশ্ন: দেশের এয়ারপোর্টে নেমে শ্রমিকরা খারাপ ব্যবহারের সম্মুখীন হন। এ ব্যাপারে কী করণীয় আছে?
ইমরান আহমেদ: ইয়েস। এই ব্যাপারে করণীয় আছে এবং কাজ হচ্ছেও। আমাদের প্রবাসী যে ওয়েলফেয়ার ডেস্ক আছে– এই ডেস্ক দুই জায়গায় আছে। একটা অ্যারাইভালি আরেকটা ডিপারচারলি। আপনি বলছেন অ্যারাইভালের ওখানে। আমরা ওই ডেস্ক নতুনভাবে সাজিয়েছি। এখনো কমিপ্লিট হয় নাই কিন্তু হয়ে যাবে। বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। যদি কোন প্রবাসীর উপর কোন নির্যাতন হয় তাহলে তার রেকর্ড থাকবে। আর অন রেকর্ড হলে যে অফিসারই হোক না কেন- তার খবর আছে।
বিজ্ঞাপন