দুই হাতে দুটি পচা আপেল নিয়ে এক যুবক দাঁড়িয়ে আছেন নির্বাচন কমিশনের সামনে, বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে চোখে পড়ে এ অভিনব দৃশ্য। পথচারি থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশনে আসা সকলের কৌতুহলের কারণ হন তিনি।
প্রচণ্ড গরমে দাঁড়িয়ে থাকা হানিফ বাংলাদেশি নামের সেই যুবকের হাতে পচা আপেল আর গলায় অ্যাপ্রোন সদৃশ প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা, ‘ভোটের প্রতি ও নির্বাচন কমিশনের উপর জনগণ আস্থা হারিয়েছে। হারানো আস্থা অর্জনে নির্বাচন কমিশনের আমূল পরিবর্তন চাই’।
নির্বাচন কমিশনের আমূল সংস্কারের দাবি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে এবং সম্প্রতি পর পর কয়েকটি উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলের প্রতিবাদস্বরূপ তিনি সেখানে প্রতীকি প্রতিবাদের জন্য দাঁড়িয়েছেন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: ৩০ তারিখের নির্বাচনে ভেটাররা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। তারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিছুদিন আগে যে উপজেলা নির্বাচন হয়েছে সেখানেও জনগণ অংশগ্রহণ করে নাই। সাধারণ জনগণ ভোটের উপর যেমন আস্থা হারিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উপরও আস্থা হারিয়েছে। নির্বাচন কমিশনারের এখনই পদত্যাগ করা উচিৎ।

সেসময় তিনি হাতে থাকা দুটি পচা আপেল দেখিয়ে বলেন: আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন আপেলের মত পচে গেছে। আপেল যেমন পুরোটা অংশ ধরে পচে না। একটা অংশ ধরে পচনশীল, ওই অংশটা কেটে ফেললে বাকি অংশটা খাওয়া যায়। আমি মনেকরি নির্বাচন কমিশন এই আপেলের মত পচে গেছে।
‘যদি সংস্কার করা হয় তাহলে নির্বাচন কমিশন দিয়েও ভবিষ্যতে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব। তাই এর দায়িত্বে যারা আছেন তাদের এখনই পদত্যাগ করা উচিত এবং এটাকে পুনর্গঠন করা উচিত যাতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রমুখী হয় এবং ভোটের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়।’
নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেবেন জানিয়ে তিনি বলেন: স্মারকলিপি যদি নির্বাচন কমিশন নেয় তাহলে ভালো। কারণ এটা একটা সাংবিধানিক পদ। এখান থেকে কাউকে জোর করে তাড়ানো যাবে না। আর তাই উনারা নিজেদের মান-ইজ্জত রক্ষা করে যদি এটাকে পুনর্গঠন করে তাহলে ভালো, না হলে আমি রাষ্ট্রপতিকেও স্মারকলিপি দেবো।
সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আপেল হাতে প্রতিবাদ জানিয়ে এমন করছেন তা নয়, এর আগেও তিনি নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া এক হাজার চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটেছেন। জনগণ তাকে ‘হানিফ বাংলাদেশি’ বলে চেনে বলেও জানান তিনি।
যুবকের ভাষ্যমতে সাধারণ জনগণ তাকে বলেছেন: যেহেতু বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আপনি পায়ে হেঁটে জয় করতে পেরেছেন। সেহেতু আপনার জয় হবেই।
জনগণ ভোটকেন্দ্রমুখী হচ্ছে না বলে হানিফ চিন্তিত এবং যেই নামেই হোক ভোট ব্যবস্থা যদি পুনর্গঠন করা হলে তার সব ধরণের প্রতিবাদ কর্মসূচি সফল হবে বলেও জানান তিনি।