
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরও বিরোধীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নতুন করে সরকার সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।
এসময় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আদৌ নির্বাচন হবে কিনা এবং কিভাবে হবে তা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন: তফসিল ঘোষণা এবং নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমাদানের পরও নির্বাচনে প্রার্থী, নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা, গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা অব্যাহতভাবে চলছে। প্রধানমন্ত্রী সংলাপে সবার সামনে কথা দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কথা রাখা হচ্ছে না। আমাদের প্রার্থীদের জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে। এই অবস্থায় নির্বাচন কিভাবে সম্ভব, কতটা সম্ভব, তা আমার জানা নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন: আমরা এই নির্বাচনকে আন্দোলন হিসেবে গ্রহণ করেছি। কেননা, দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে কিনা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা যাবে কিনা এই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার উপর নির্ভর করছে। যদিও দেশের সকলে একমত, বর্তমান অবস্থায় কোন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
‘নির্বাচন কমিশন নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উপরন্তু তারা সরকারের নির্দেশ মেনে কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন সেভাবে কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই কমিশন, সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নে কাজ করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সকল গায়েবী মামলা প্রত্যাহার করুন, গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিন, অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দায় নিতে হবে।’
এসময় ফখরুল ইসলাম আলমগীর তফসিল ঘোষণার পর থেকে গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যান তুলে বলেন, গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পরে নারায়ণগঞ্জ জেলায় ২৫ জন, ঢাকা মহানগর থেকে প্রায় ৬শ এর মতো নেতাকর্মী,বগুড়ায় থেকে ৫৩৭ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পরও গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে। ২৭ তারিখ থেকে ঢাকা মহানগরে ২৭ জন, কুমিল্লায়-১৫ জন মাগুরায় বিএনপি প্রার্থী মনোয়ার হোসেন সহ ২৩ জন, বিএনপি নেতা, নরসিংদীর সভাপতি খায়রুল কবির খোকনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, চট্টগ্রামে ২৩ জন আটক করা হয়৷ এভাবে অব্যাহতভাবে গ্রেপ্তার চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।