দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ছাদকৃষির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন রাজধানীর ইন্দিরা রোডের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম। মনের প্রশান্তি আর পারিবারিক চাহিদা পূরণের চিন্তা থেকেই দিনের পর দিন স্বপ্নের মতো সাজাচ্ছেন নিজের কৃষি।
শুরুটা নব্বই দশকের শুরুতে। তখন ছাদকৃষির চিন্তাটি একেবারে সৌখিনতা ও অভিজাত্যের পর্যায়ে। নগর জীবনে এক টুকরো কৃষিক্ষেত রচনা করে তাজুল ইসলাম বেশ তৃপ্ত হয়েছেন। তারপর কর্মজীবনের ব্যস্ততা, ভবনটির নানা পরিবর্তন কোনোকিছুই আটকে রাখতে পারেনি তার কৃষিচর্চাকে। এখন ছয়তলা ভবনের ছাদেই কাটে তার অবসর জীবনের বড় অংশটি।
তাজুল ইসলাম জানান, শুরু থেকেই বাসভবনটিকে তিনি চিন্তা করেছেন ছাদকৃষিকে প্রাধান্য দিয়ে। বাড়িটা করার সময় ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে বাড়িটা এভাবে করেছেন।
একে একে তিনি কৃষিতে অনুরক্ত করেছেন পরিবারের অন্যান্যদেরকেও। ছাদকৃষিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন চিন্তা। তাজুল ইসলামের ছেলে ডা. ফয়জুল ইসলাম জানান, ছাদে স্থাপন করা আধুনিক অবকাঠামোর কারণে এই ছাদকৃষির কোনো ভার ছাদের উপরে নেই। সব ভার চেপেছে ভবনের বিমের উপরে।

এই পরিবারের সবজি চাহিদার অনেকটাই পুরণ হচ্ছে এই ছাদকৃষি থেকে। তাজুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা বলেন, বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হয় এখানে। লাউ, মুলা, ক্যাপসিকাম সবই হচ্ছে ছাদে।
তাজুল ইসলামের মনে করেন, সঠিক সহযোগিতা ও উপকরণের যোগান পেলে যে কেউই হয়ে উঠতে পারেন আদর্শ ছাদকৃষক। বলেন, নার্সারিগুলো থেকে এখন আর সঠিক গাছের চারা পাওয়া যায় না। একবার আমাকে বললো এটা ক্যাপসিকামের চারা। পরে দেখলাম সেটা কাঁচামরিচের চারা। সেজন্য নিজেকেই ভাবতে হবে আমি কিভাবে কাজটা করবো, নিজেকে এই ব্যাপারে শিক্ষিত করতে হবে।
এই নগরগুলো যখন থেকে মানুষে পরিপূর্ণ হচ্ছে তাগিদগুলোও তখনকার। তাজুল ইসলাম তাদেরই একজন, যারা অনেক আগ থেকে ছাদে বাগান বা কৃষিকাজ করতে আগ্রহী হয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় তাদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে এবং তাদের উত্তরসূরীরাও চাইছেন ছাদ সবুজে ভরে দিতে।