১৯৭৭ সালে আমি চলচ্চিত্রে এসেছি। ৮৩ সাল পর্যন্ত অনেক ছবি করেছি কিন্তু সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারিনি। তারপর আমার অভিনীত প্রথম জনপ্রিয় ছবি ছিল ‘আঁখি মিলন’। ওই ছবির একটি গান ছিল ‘আমার গরুর গাড়িতে’। এই গানটির জন্য ছবিটি সুপার ডুপার হিট হয়। আর এই গানটি গেয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর। তার কণ্ঠের সঙ্গে আমার অভিনয় কেন জানি দর্শক খুব পছন্দ করতো। ওইগানের পর থেকেই আমি আমার ক্যারিয়ারের উন্নতিটা অনুভব করতে থাকি।
‘আমার গরুর গাড়িতে’ গানটির পর আমার প্রায় সব ছবিতে তার গান থাকতো। বিশেষ করে ১৯৮৮ ‘ভেজা চোখ’ নামে একটা ছবিতে তার অনেকগুলো গান ছিল এবং ওই ছবিটা গানের কারণে বেশি ব্যবসা করে, পরবর্তীতে বলিউডেও ছবিটি রিমেক করে। শুধু কি তাই, আমার ক্যারিয়ারের মাইলফলক ছবি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র নাম গানটিও তো ছিলো তার কণ্ঠে। সেসময় কী যে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো গানটি! আসলে তাঁর গানের জন্য আমার বহু ছবি সুপার ডুপার হিট হয়েছে।
১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বরে একবার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সিঙ্গাপুর যাই। আমার অবস্থা এত খারাপ ছিল তো জানতামই না যে আমি আবার বেঁচে ফিরব। আমার স্পষ্ট মনে আছে, তখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে গান করেছিলাম ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’।
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম ১৯৫৫ সালে এবং আমার জন্ম ১৯৫৬ সালে। সুতরাং আমাদের বয়সের অনেক বেশি পার্থক্য রয়েছে এমনটা নয়। ওনার চলে যাওয়াটা দ্রুত হয়ে গেল। বেঁচে থাকলে উনি আমাদের আরও গান উপহার দিতেন।

স্মৃতিচারণ: ইলিয়াস কাঞ্চন, অভিনেতা