দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে হওয়া এ সংক্রান্ত দুর্নীতির দুটি মামলা দ্রুত নিস্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আজকের আদেশের পর দুদকের আইনজীবী বলেন: ‘আপিল বিভাগ ডেসটিনির এই শীর্ষ দুই কর্মকর্তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। তাই এই আদেশের ফলে তাদের কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।’
এর আগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনসহ ডেসটিনি গ্রুপের ২২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দু’টি মামলা করে দুদক। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ (এমএলএম) ও ট্রি-প্ল্যানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দু’টি করা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ২০ জুলাই শর্তসাপেক্ষে রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে দুদকের আবেদনে সে জামিন স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগ।
পরবর্তীতে ডেসনিটির পক্ষ থেকে আপিল বিভাগকে বলা হয়, তাদের কাছে ৩৫ লাখ গাছ আছে।
প্রতিটি গাছ আট হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে পারবেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে জামিনের শর্ত পূরণে জন্য আপিল বিভাগ দুই আসামি যে কারাগারে আছেন, সেখানে তাদের গাছ বিক্রির সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর ও আলোচনার সুযোগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এছাড়া আদালত তার আদেশে বলেন, যদি গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে না পারেন, তাহলে নগদ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেবেন তারা।এবং এর অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে। এরপর যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তাদের কাছে টাকা হস্তান্তরের পর জামিনে মুক্তি পাবেন দুই কর্মকর্তা। কিন্তু এর কয়েকমাস পরে তারা আদেশের সংশোধন চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। সে আবেদনে কারাগারে থাকায় এ শর্ত পূরণ সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেন তারা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আদেশ সংশোধন চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এরপর আবার ডেসটিনির এই শীর্ষ দুই কর্মকর্তা
আপিল বিভাগে জামিন আবেদন করেন। যা আজ খারিজ করে দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।