চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

টাঙ্গাইলের নিমের হাড় দিয়ে খেলবে জাপানের কুকুর

বিখ্যাত টম এ্যান্ড জেরির কার্টুন দেখেননি এমন মানুষ হয়ত কমই পাওয়া যাবে। টম এ্যান্ড জেরির কার্টুনে বিড়াল টম ও ইঁদুর জেরির পাশাপাশি আরেকটি চরিত্র কুকুর স্পাইকের কথাও সবারই জনা। সেই কার্টুনে কুকুর স্পাইকের কাছে হাড় কতখানি প্রিয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। কার্টুনে কুকুরের কাছে হাড় যতখানি প্রিয় বাস্তবেও তা কোন অংশে কম নয়। জাপানের কুকুরদের হাড়ের চাহিদা মেটাতে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা গ্রাম থেকে নিম কাঠের তৈরি হাড় যাচ্ছে জাপানে। কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য এটি।

জাপানে নিম কাঠের তৈরি হাড় পাঠানো প্রতিষ্ঠান ফ্লাশ ওয়ান বিডি এর স্বত্ত্বাধিকারি তালুকদার মো. শাহজাহান জানান, ওই দেশে তাদের কিছু পরিচিত লোক আছেন যাদের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশী পণ্য সেখানে পাঠিয়ে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় তাদের কাছে কুকুরের খেলা করার জন্য নিম কাঠের তৈরি কাঠের হাড় চাওয়া হয়। প্রথমে বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হয়। পরে তারা টম এ্যান্ড জেরি কার্টুনের কুকুর হাড় দিয়ে খেলা করছে এমন একটি সিডি ও হাড়ের নমুনা পাঠালে কাজে লেগে যায়।

Bkash July

অনেক বাঁধা পেরিয়ে গত ৫এপ্রিল ৩০ হাজার পিস নিম কাঠের হাড় পাঠাতে সক্ষম হয় তারা।  কাজটা সহজ ছিলনা। প্রথমত বাংলাদেশে যারা কাঠের কাজ করেন তাদের যন্ত্রপাতি ও জ্ঞানের অভাব। দ্বিতীয়ত নিম গাছ ও কাঠের অপ্রতুলতা। প্রত্যন্ত গ্রামে ঘুরে ঘুরে নিম কাঠ সংগ্রহ করতে হয়েছে। শুরুতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা সিএফটি করে নিম কাঠ সংগ্রহ করতে পারলেও পরে তা ১০০০ টাকা সিএফটি পর্যন্ত কিনতে হয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আর জ্ঞানের অভাবেও সমস্যা হয়েছে।

হার বানাতে গাছ কাটার পর তা তিন মাস রোদে শুকাতে হয়েছে। কাঠ শুকিয়ে গেলে তা মেশিনে চিরে হাড়ের আকৃতিতে আনতে হয়েছে। পরে শিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষে মৃসন করে হালকা আগুনের তাপে পুড়িয়ে একেকটি হাড় তৈরি করতে হয়েছে। ৩০ হাজার পিস হাড় তৈরি করতে ৫ মাস সময় লেগেছে। এতে তাদের ব্যায় হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা।

Reneta June

কেন নিম গাছ এই বিষয়ে তালুকদার মো. শাজাহান জানান, এটি দিয়ে তাদের পালিত কুকুরদের খেলা করানো হবে। জাপানের মানুষ সাধারণত অরগানিক ও বিশুদ্ধ পণ্যে বিশ্বাস করেন। অন্য কোন গাছের কাঠে নিম কাঠের মতো গুণাগুণ না পাওয়ার কারণেই হয়তো তারা নিম গাছকেই বেছে নিয়েছে।

মো. শাজাহান আরোও বলেন নিমের কাঠ দিয়ে কাজ করায় শ্রমিকদের চুল পড়া, মাথায় খুসকি, শরীরের চুলকানি এবং ঠান্ডা লাগার যে রোগ ছিল তা দূর হয়ে গেছে। লাভের বিষয়ে তিনি জানান, নিমের কাঠের হাড় পাঠানোর আগেও জাপানের সবজি বাগানের মাচার জন্য ২০ টন পাটের রশির নেট পাঠিয়েছিলেন। এবার আরো ৩০ টনের অর্ডার পেয়েছেন। তবে সরকার যদি এই ক্ষেত্রে অনুদান বা সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে তাদের সহায়তা করতো তবে এ শিল্পের উন্নতি সম্ভব।

ISCREEN
BSH
Bellow Post-Green View