চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

জনগণের ইচ্ছায় উন্নয়ন হবে জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখে: মোদি

KSRM

জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখের উন্নয়ন অঞ্চলগুলোর জনগণের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা এবং স্বপ্ন অনুসারেই হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএএনএস’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন তিনি।

Bkash July

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার ৭৫ দিনের মধ্যে মোদি সরকারের নেয়া সবচেয়ে আলোচিত সিদ্ধান্তের একটি হলো সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে জম্মু কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনসহ বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা ফিরিয়ে নেয়া এবং জম্মু কাশ্মীরকে দু’টো অংশে ভেঙে জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখ – এই তিনটি অঞ্চলকে পৃথক পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা।

সরকারের দাবি, এ অঞ্চলে সংহতি বজায় রাখা, গতিশীল উন্নয়ন আনা ও দ্বৈত নাগরিকত্বের ভ্রান্ত ধারণা দূর করার উদ্দেশ্যেই সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে।

Reneta June

কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অনেকে স্বাগত জানালেও বিরোধিতা করছেন অসংখ্য মানুষ। সংবিধানে এ পরিবর্তন আনার পর থেকে পুরো কাশ্মীর অঞ্চলে চলছে অস্থিতিশীল অবস্থা। আইএএনএসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এ বিষয়টি সম্পর্কে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

মোদির যুক্তি, ৩৭০ এবং ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ আসলে সার্বিকভাবে ভারতের ক্ষতি করছিল: ‘এটা এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে কীভাবে ৩৭০ ও ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছিল। জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখের আমার বোনরা এবং ভাইরা সর্বদাই একটি উন্নত ভবিষ্যৎ চেয়েছিল, কিন্তু ৩৭০ অনুচ্ছেদ গত ৭ দশকে তা দিতে পারেনি। নারী ও শিশু, তফসিলি উপজাতির পাশাপাশি তফসিলি জাতিদের ওপরও অবিচার চলছিল।

এবং সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হলো, জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের মানুষের উদ্ভাবনী উদ্যোগকেই মর্যাদা দেয়া হয়নি। উপার্জন বৃদ্ধির জন্য যথাযথ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছিল না। আমাদের পরিকল্পনা ভিন্ন ধারার। দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র চালিয়ে যাওয়ার বদলে এখানকার জনগণের দরকার অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা। এখন বিপিও থেকে শুরু করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন অনেক শিল্পই বিনিয়োগের সুযোগ পেতে পারে এবং স্থানীয় যুবকদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে। শিক্ষা এবং দক্ষতার বিকাশও ফুলে ফেঁপে উঠবে।’

জম্মু কাশ্মীর-গুজবে কান দেবেন না
জম্মু কাশ্মীর পুলিশ প্রকাশিত ছবি

তিনি বলেন, ‘আমি জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখে আমার বোন এবং ভাইদের স্পষ্টভাবে আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই অঞ্চলগুলো স্থানীয় জনগণের ইচ্ছা, তাদের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ীই বিকশিত হবে। এই অঞ্চলগুলোর অগ্রগতি সবার আগে এখানকার লোকজন দ্বারাই পরিচালিত হবে।

৩৭০ এবং ৩৫ (এ) শেকলের মতোই জনগণকেকে বেঁধে রাখত। সেই শেকল এখন ভেঙে গেছে, মানুষ এখন নিজেই নিজের ভাগ্য গড়বে।’

জম্মু কাশ্মীরের মানুষ আপনার পাশে আছেন কিনা, এ প্রশ্নে জবাবে মোদি বলেন, ‘কাশ্মীর সম্পর্কে নেয়া সিদ্ধান্তের যারা বিরোধিতা করছেন তাদের তালিকা দেখুন – স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী, রাজনৈতিক রাজবংশ, যারা সন্ত্রাসের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বিরোধী দলের কয়েকজন বন্ধু। ভারতের জনগণ তাদের রাজনৈতিক পছন্দ নির্বিশেষে জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখে গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে সমর্থন করেছে। এটি জাতির মঙ্গলের জন্য গৃহীত সিদ্ধান্ত, রাজনৈতিক নয়। ভারতের মানুষ দেখছে যে, কঠিন কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় যেসব সিদ্ধান্ত আগে অসম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তা বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।’পাকিস্তান-কাশ্মীর-ভারতের ‘অবৈধ’ সিদ্ধান্ত

যারা সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে তাদের কাছে মোদি প্রশ্ন রেখেছেন, ৩৭০ এবং ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ বহাল রাখার পক্ষে তাদের কাছে কোনো যুক্তি আছে কিনা। তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের কোনো জবাব তাদের কাছে নেই। এরা সেই মানুষ যারা সাধারণ মানুষের উপকারে আসে এমন যে কোনো কিছুর প্রতিবাদ করে।’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ স্থানীয় রাজনৈতিক শ্রেণিকে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা এড়িয়ে যেতে সাহায্য করে এসেছে। এর বিলুপ্তির ফলে অঞ্চলটিতে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন