ঐতিহাসিক ছয়-দফা দিবসের ৫০ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, পূর্ব বাংলার জনগণের মুক্তি, স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিসাসে ৬ দফা একটি অন্যতম মাইল ফলক। ঐতিহাসিক এ দিনে আমি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আন্দোলন আর ত্যাগের ইতিহাস। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন বাঙালির মুক্তি আন্দোলন-সংগ্রামকে ক্রমান্বয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর করে দেয়। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও বৈষম্যনীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে লাহোরে সর্বদলীয় সম্মেলনে ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। এই ৬ দফার মধ্যেই তিনি পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেন। মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার অপরিহার্যতা বিধৃত ছিল এ দাবিসমূহের মধ্যে। শেখ মুজিব এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবির্ভূত হলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের মহান নেতা হিসেবে।
৬ দফা ঘোষণার পর শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে বারবার গ্রেফতার করে এবং তাঁর উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। কিন্তু এসব সত্ত্বেও তিনি ৬ দফার দাবি থেকে সরে আসেননি। তার নেতৃত্বে দাবি আদায়ের আন্দোলন বেগবান হয় এবং তা অল্প সময়ের মধ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে আমি ৬ দফার দাবি আদায়সহ জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিহত সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
সারাবিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনেও তা সবসময় অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে বিশ্বাস করেন রাষ্ট্রপতি। বলেন, আসুন, আমরা ৬ দফা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্মিলিতভাবে দেশ গড়ার কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ৭ জুন এক অবিস্মরণীয় দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালের ৭ জুন নতুন মাত্রা পায়।
বাঙালির মুক্তিসনদ ৬ দফা আদায়ের লক্ষ্যে এদিন আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার উপর পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর গুলিবর্ষণ করে। এতে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, সফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহিদ হন।
আজকের এই দিনে আমি ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।