মনে কর আমি পারি
তোমরাও বললে আমি পারি
কিন্তু ধর আমি পারলাম না
অথবা জানতে দিলাম না যে আমি পারলাম না।
কেউ কি একটু এঁকে দেখাবে?
নরম তুলতুলে ফুল তুলে
লাল লাল সবুজ সবুজ সুতায়
লিখে দিতে পারবে
‘ভুল না আমায়’।
আমাদের গ্রামের আশুতোষ যখন গ্রাম ছেড়ে
শহরে গিয়েছিলেন
অনেক দিন তার মেসের দরজার উপর
ফ্রেমে বাঁধানো ছিল ‘ভুল না আমায়’
সত্যি বলতে কি সে কখনো
ভুলে থাকেননি তার চিত্রলেখাকে।
সেই থেকে মনে জোর পেয়েছি ভুলে না থাকার।
এখন আমি বিছানায়, শ্বাস প্রশ্বাস সব যায় নলের ভেতর
ধবধবে সাদা আমার বিছানার চাদর।
আমাকে ওঠালে উঠি বসালে বসি
আমার ভাতের থালা থাকে অন্যের হাতে।
সেখান থেকে চামচের আগায় ঝুলে ঝুলে পুষ্টি আসে
এমতাবস্থায় তোমাদের কাছে রেখেছিলাম শেষ মিনতি।
আমার কণ্ঠনালি আছে, আছে জিহ্বা
তবু শুধু চোখ দিয়ে কথা বলেছি,
লাল লাল সবুজ সবুজ সুতোয় লিখে দাও ‘ভুল না আমায়’।
নাকি ভয় পাও ভুলে যাবে!
যেমন করে অনেকে ভুলে গেছে আমার সন্তানদের।
যাদের জন্য আমি জুতো পায়ে মাটিতে হাঁটি নি বহুদিন।

ওরা ছিল মাটিতে দাঁড়িয়ে
ওরা পড়ে গিয়েছিল মাটিতে
ওদের গায়ে রক্ত ছিল
রক্ত পড়েছিল মাটিতে
সে মাটিতে আমি জুতো পরে হাঁটি কি করে?
তোমরা যেমন খুশি হাঁটো
যেমন খুশি দাঁড়িয়ে থাক
ইচ্ছে হলে ভুলে যেও আমাকে, ওদেরকে।
কোন অভিমান রবে না
আমি বেঁচেছিলাম শুধু মৃত্যু কামনা করে
এখন আমি যুদ্ধে যাবো
কায়দা করে মাটির নিচে সাড়ে তিন হাত জায়গা করে নিয়েছি।
মনে কর এটাও একটা বাঙ্কার।
এখান থেকে সুড়ঙ্গ কেটে চলে যাব পেশোয়ার।
আমার বুকের ওপর দেশের পতাকা
ওদের গায়ে মার্কিন কাপড়
প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে হাত পা সর্বাঙ্গে, টগবগিয়ে।
আমি পারবো।
আমাকে পারতেই হবে।
কতবার ‘না’ ‘না’ বলেছি।
শোনেনি সে কথা। এখন কেন শুনবো তাদের আজে বাজে চিৎকার।
ওদের মধ্যে যারা মরেছে তাদেরই মারবো।
মৃত মানুষ এবার খুন হবে বীরাঙ্গনার হাতে।
এ যুদ্ধ আমার, আমাদের।
জীবিতরা দূরে থাকো এবং
সংবাদটি পৌঁছে দাও।
চট্টগ্রাম মেল ছেড়ে গেছে
তোমরা ভুল না তাকে
মাকে।