ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)’র এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যেকোন নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) তার সবটুকু ঢেলে দেবে।’
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে ম্যান্ডেট রয়েছে সেটি বাস্তবায়ন করার জন্য ডাকসু তাদের আগামীদিনের কর্মপরিকল্পনাও নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেন সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত এই ডাকসু নেতা।
বুধবার বিকেলে টিএসসির পায়রা চত্বরে ডাকসু আয়োজিত স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সাদ্দাম এমন সময় এই কথাগুলো বললেন, যখন ডাকসুর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও আন্তরিকতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে ডাকসুর বেশিরভাগ কর্মসূচিতে ডাকসু ভিপিকে না জানানোর অভিযোগ রয়েছে। আবার ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদকের সংবাদ সম্মেলন ও বিভিন্ন কার্যক্রমেও ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত কাউকে দেখা যায় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ডাকসুতে ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাচারীতা নিয়ে গত ১ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেছিলেন, ছাত্রলীগ ডাকসুকে ডাকসুলীগে পরিণত করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডাকসুর সভাপতি হতে পারেননি, তিনি ডাকসু লীগের সভাপতি হয়েছেন। তিনি ডাকসুকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্ল্যাটফর্ম না বানিয়ে ডাকসু লীগ বানাতে চাচ্ছেন। আমরা এটাও দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময়ই ছাত্রলীগের পক্ষ হয়েই কাজ করেছেন, তাদের পক্ষ নিয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক।’
গত ২৯ নভেম্বর (শুক্রবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সভা করেন ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) প্রতিনিধিরা। অথচ এ সভার বিষয়ে ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকে জানানোই হয়নি। ছাত্রলীগের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের না জানিয়ে কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘মুক্তির আন্দোলন’ করায় সভার বিষয়ে তাঁকে জানানো হয়নি।
এই অবস্থায় ডাকসু এজিএসের আজকের বক্তব্যের পর ডাকসু ভিপি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা যে অভিযোগগুলো করেছিলাম সাদ্দাম হোসেন আজ তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সেটিই প্রমাণ করলেন।
নুর বলেন, আজকের অনুষ্ঠানটি ছিল ডাকসুর। অথচ সেখানে আমাকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে। তারা আমাদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব করছে।
আজকের অনুষ্ঠানে সাদ্দাম মেয়েদের সকল হলে সিলিং ফ্যানের সুবিধা চেয়ে সহ-উপাচার্য নাসরীন আহমাদ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মেয়েদের হলে যে পুরাতন ভবনগুলো রয়েছে সেখানে সিলিং ফ্যানের কোন ধরনের ব্যবস্থা নেই। বলা হয় যে আমাদের মেয়েরা বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ। এধরণের আজগুবি কুসংস্কারাচ্ছন্ন কথা বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের সিলিং ফ্যানের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
সাদ্দাম বলেন, আমরা যদি বলি মেয়েরা আত্মহত্যা প্রবণ, তাহলে এটি আমাদের মনুষ্যত্বের অপমান।
তিনি মেয়েদের সকল হলের সব কক্ষে সিলিং ফ্যানের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষদের সহযোগিতা চেয়েছেন। পাশাপশি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন প্রত্যেক একাডেমিক ভবনে মেয়েদের কমনরুমের নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করতে।
দাবি মানা না হলে প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ডাকসু এজিএস বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন করতে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আমরা যেকোন কিছু করার জন্য প্রস্তুত আছি।