নাশকতা চেষ্টা ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও রিজভী আহমেদসহ প্রায় ৮শ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একটি মামলা হয়েছে রমনা থানায়, বাকি দু’টি শাহবাগে।
সরকারি কাজে বাধা দেয়া, ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, অস্ত্র কেড়ে নেয়ার চেষ্টা ও পুলিশ হেফাজত থেকে আসামী ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
রমনা থানার উপ কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার চ্যানেল আই অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে সেখানে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে শাহবাগ থানার মামলা দু’টির মধ্যে একটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রিজন ভ্যানে হামলা ও আটক দুইজনকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দু’টি মামলা (নম্বর ৫৭ ও ৫৮) করা হয়েছে। শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) রহিদুল ইসলাম ও চম্পক বাদী হয়ে মামলা দু’টি করেছেন।
মামলায় আটক ৬৯ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও আরও ৭-৮শ’ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে বলে জানান ডিসি মারুফ। হামলার পর নির্দেশদাতা হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আটক করেছে পুলিশ।
তিনটি মামলারই বাদী পুলিশ। বুধবার বিকেলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ আটক অর্ধশত বিএনপি নেতাকর্মীকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমাণ্ডের আবেদন জানানো হবে।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গুলশান পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং বেগম খালেদা জিয়া আদলত থেকে ফেরার পথে রমনা ও শাহবাগ এলাকায় আরও অর্ধশত নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। মামলা তিনটিতে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকেও শান্তিনগরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর বাসায় রাতে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে আটকদের ছিনতাইয়ের ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আটক করা হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার আদালত থেকে ফেরার পথে হাইকোর্টের সামনে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে থাকা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এসময় আটক দু’জনকে প্রিজন ভ্যান থেকে নিয়ে যায় বিএনপিকর্মীরা।