গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আইসোটোপ বিহীন ইলেক্ট্রনিক ব্রাকিথেরাপিতে মাত্র ১২ হাজার টাকায় ক্যান্সার চিকিৎসা করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে শনিবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।
আধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসায় এর মাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, প্রচলিত ব্রাকিথেরাপিতে ক্যান্সার টিস্যুর ভেতর রেডিওএ্যাক্টিভ সাের্স দিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়। এগুলাে রেডিওনিউক্লিয়াইড হিসেবে পরিচিত। এই সাের্সগুলি খুব উচ্চ মাত্রার বিকিরন ঘটায়।
সম্প্রতি এক গবেষণায় (International Coidmission on Radiation Protection) বলা হয়, উচ্চ মাত্রার বিকিরণের ফলে কম করে হলেও ৫০০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং তাতে প্রাণহানি ঘটছে।
রেডিওএ্যাক্টিভ সাের্স ব্যাবহারের ভিত্তিতে করে ব্রাকিথেরাপি দুই রকম আছে। একটি প্রচলিত রেডিওনিউক্লিয়াইডযুক্ত। অন্যটি রেডিওনিউক্লিয়াইড মুক্ত বিকিরন নিরাপদ ইলেক্ট্রনিক ব্রাকিথেরাপি যা ক্যান্সার চিকিৎসায় নিরাপত্তা ও কার্যকরিতায় নবদিগন্ত উন্মােচন করেছে।
ইলেক্ট্রনিক ব্রাকিথেরাপিতে এক্সরে রশ্নি দ্বারা নিরাপদে চিকিৎসা করা হয়। এই ধরনের ব্রাকিথেরাপি দ্বারা পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্যবান টিস্যুকে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে শরীরের প্রায় যে কোনো স্থানের ক্যান্সার চিকিৎসা করা যায়, যেমন স্তন (Breast) ক্যান্সার, নন-মেলানােমা চর্ম ক্যান্সার, জরায়ূসহ গাইনােকোলজিকাল ক্যান্সার, প্রোস্টেট (Prostate) ক্যান্সার, প্যানক্রিয়েটিক (Pancreatic), অন্ত্র (Intestinal), পায়ুপথ (Rectal) ও মস্তিস্কের ক্যান্সার ইত্যাদি।
ক্যান্সার রােগীদের সুবিধার কথা ভেবে নগর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে এই সর্বাধুনিক পদ্ধতির ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যাবস্থা ইলেক্ট্রনিক ব্রাকিথেরাপি Xoft Axxent Electronic Brachytherapy System (eBx) System স্থাপন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ক্যান্সার হলে একজনের মৃত্যু ঘটে না, পুরো পরিবারের মৃত্যু ঘটে। জায়গা জমি বিক্রি করে দিতে হয়। চিকিৎসা ব্যায়ের তুলনায় সাময়িক নিরাময় হলেও পূর্ণাঙ্গ নিরাময় হয় না। আগে ক্যান্সার চিকিৎসার পদ্ধতি অনেকটা জটিল ছিল কিন্তু বর্তমানে নতুন প্রযুক্তিতে যে মেশিন আবিষ্কার হয়েছে সেটাই ক্যান্সার চিকিৎসা সহজ হয়েছে। নতুন এই মেশিনে কোন সোর্স ব্যবহার করতে হয় না।ডিস্পোজালের ঝামেলা নেই। সময় কম লাগে। এটা বাংলাদেশের প্রথম মেশিন। আমাদের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে কেমোথেরাপির ব্যবস্থা আছে, সার্জিক্যাল অনকোলজির ব্যবস্থা আছে, এখনতো ব্রেকিথেরাপির ব্যবস্থাও আছে এবং আমাদের এখানে বোনমেরু রিপ্লেসমেন্টের ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেস্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ক্যান্সার বিভাগের কোওর্ডিনেটর ডা. সামিম উল মওলা, প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ক্যান্সার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. খোরশেদ আলম।
আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিটিউট সাবেক পরিচালক ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ক্যান্সার বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এম এ হাই, জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিটিউট সহযোগী অধ্যাপক হাবিবউল্লাহ তালুকদার
রাসকিন, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, ইতালি থেকে জুমে অংশ নেন দক্ষিণ এশিয়ার জপ্টের প্রধান পিয়ারে ফ্রান্সেসকো, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কার্ডিওলজি বিভাগেে সহযোগি অধ্যাপক সাইদ-উজ জামান অপু প্রমুখ।