মন্ত্রিসভায় সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অনুমোদন দেয়ায় বুধবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদ কমান্ড।
বুধবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। পরে প্রক্টরের অনুরোধে মহাসড়ক থেকে সরে যায় তারা।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড রাস্তা অবরোধ করেছে বলে জানা যায়। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। ‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘আমাদের ধমনীতে শহীদের রক্ত’সহ আরো অনেক স্লোগান দিতে থাকে এবং বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করবে বলে ঘোষণা দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি শাখা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড তারেক হাসান বলেন, ‘কোটা আমাদের অধিকার। কিন্তু যারা দেশের জন্য জীবন দিলো তাদের সম্মান কতটুকু রাখা হলো। সাংবিধানিকভাবে তাদের কোনো স্বীকৃতি নাই, যা বঙ্গবন্ধু উপহার দিয়ে গেছেন তাই আছে। দেশের রাজাকারদের প্ররোচনায় কোটা বাতিল করার কোনো প্রশ্ন আসে না। আমরা চাই মুক্তিযোদ্ধার সম্মান ফিরিয়ে দেয়া হোক।’
এসময় তিনি দাবি আদায় না হওয়া পযর্ন্ত তাদের এই বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
রাজশাহী মহানগরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল এটা থাকবে বলে আমরা আশা করি। কোটা কোনো অঞ্চলিক বিষয় না, এটা সারা দেশব্যাপী চলছে। তাই কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। আগামীকাল থেকে রাজশাহীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সকল মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা একত্রে হয়ে কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।’
কোটা বহাল রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করছে শুনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান ঘটনাস্থলে এসে তাদের মহাসড়ক উঠে যাওয়ার জন্য বলেন এবং তারা যাতে শান্তিপূর্ণ অন্দোলন করে তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শান্তির জন্য যুদ্ধ করেছে। কিন্তু তোমরা তাদের সন্তান হয়ে যদি দেশে অশান্তি সৃষ্টি করো তাহলে তাদের সম্মান থাকবে? ন্যায্য দাবিতে যে কেউ আন্দোলন করতে পারে। তবে তা সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষতি না করে। তোমরা আন্দোলন করো তবে ক্যাম্পাসের ভিতরে শান্তিপূর্ণভাবে।’
পরে প্রক্টরের কথা শুনে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারা মহাসড়ক থেকে উঠে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন, অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়।
এর আগে বুধবার কোটা বাতিল, পর্যালোচনা ও সংস্কারের জন্য গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব রেখে যে সুপারিশ করেছিল; তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে চাকরির কোটা বাতিল করার অনুমোদন দেন।