ফেব্রুয়ারী মাস ভাষা আন্দোলনের। ১৯৫২ থেকে ২০১৮। কি পেলো জাতি? সর্বত্র কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলা ভাষা? কেমন আছেন ভাষা সংগ্রামীরা। এই প্রশ্নোত্তরে দেশের উত্তর জনপথ দিনাজপুরে ভাষা সংগ্রামীর মুখোমুখি হয়েছি আমরা। বয়সের ভারে নুয়ে পরা ভাষা সংগ্রামী অ্যাডভোকেট আব্দুল মোতালেব এর হৃদয় ও কন্ঠে এখনও বেজে ওঠে ভাষার গান।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি..’
বয়সের ভারে নুয়ে পরা ভাষা সংগ্রামী অ্যাডভোকেট আব্দুল মোতালেব এর হৃদয় ও কন্ঠে এখনও বেজে ওঠে ভাষার এই গান। স্মরণ শক্তি আর আগের মতো নেই তার। মনে করতে পারেন না তেমন কোনো অতীত। তবুও হাতড়ে খুঁজে ফিরেন স্মৃতি। তার দুঃখ এবার তিনি ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারবেন না শহীদ মিনারে।
আইন ব্যবসায় নিয়োজিত ভাষা সংগ্রামী অ্যাডভোকেট আব্দুল মোতালেব। নিজেকে এখন আর রাখতে পাবেন না কর্ম ব্যস্ততায়। বাঙালির মাথা উচুঁ করে দাঁড়ানো, অধিকার আর স্বাধিকারের জন্যই মাতৃভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভাষা আন্দোলনে।
১৯৫২ সাল। বয়স তখন তার ২০ বছর। মেট্রিক পরীক্ষার্থী। প্রথম ছাত্র রাজনীতি। এ সময় তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন মাতৃভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠায়। অ্যাডভোকেট আব্দুল মোতালেবের জন্ম ১৯৩২ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি। বর্তমানে বসবাস করছেন দিনাজপুর শহরের পাহাড়পুরের বাসায়। ব্যক্তি জীবনে এক ছেলে এক মেয়ে তার।
ভাষার লড়াইয়ে তিনি নির্যাতন-জুলুমের শিকার হয়েছেন। খেটেছেন পর পর ২ বার জেল। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের ৫০ বছরেও বাংলা ভাষা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি বলে তার অভিযোগ।
এক সময়ের তুখোড় বামপন্থী ছাত্র নেতা মোতালেব বর্তমানে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নন। তবে বর্তমানে গায়ের জোরের রাজনীতি চলছে বলে তার অভিমত।
একসময়ের প্রগতিশীল রাজনীতির সক্রিয় কর্মী ও আইন পেশাজীবী আব্দুল মোতালেব বলেন, শুদ্ধ ভাষার মতো শুদ্ধ রাজনীতিও বিদায় নিয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছরে এসে, এখন শুদ্ধ বাংলা ভাষাকে খুঁজে-ফিরেন এই ভাষা সংগ্রামী। তার প্রাণের দাবি সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত হোক, শুদ্ধ বাংলা ভাষায় উজ্জীবিত হোক সবাই।