বিভিন্ন দেশের ৪৯৫ জন নাগরিক বর্তমানে কারাগারে বন্দী আছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, এদের মধ্যে ৮৬ জন মুক্ত হলেও কোনো দেশ তাদেরকে নিতে রাজি হয়নি, ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা জেলখানায় আছেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত ‘কমবেটিং ট্র্যাফিকিং: রিপেট্রিয়েশন অব ভিকটিমস অব ট্র্যাফিকিং’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় তিনি এমন তথ্য জানান।
সেমিনারটির আয়োজন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীজুড়ে যুগ যুগ ধরে জোর করে মানব পাচারের ইতিহাস রয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে এখন জোর করে নয়, প্রলুব্ধ করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। এতে তারা ভুক্তভোগী হচ্ছে, অনেকে বিভিন্ন দেশে আটকে আছে।
বাংলাদেশের জেলখানায়ও ৪৯৫ জন বিদেশি আটকে আছে জানিয়ে তিনি বলেন: এদের মধ্যে ৫৭ জন অপরাধী। ৮৬ জন মুক্ত হলেও তাদেরকে কোন দেশ নিতে আসছে না, ফলে বাধ্য হয়েই তারা জেলখানায় বন্দী আছে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক এ অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে রয়েছে। তাদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ বেঁচে থাকা।
‘২০১৫ সালে নৌকা দিয়ে বিদেশে যাওয়ার যারা চেষ্টা করছিলো, যে ঘটনাটি অনেক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। তখনকার বেশিরভাগই ছিলেন রোহিঙ্গা নাগরিক। এখনো যারা নৌপথে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে তাদের ৮০ ভাগই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।’
ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের কারণে মানব পাচার হয় মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মানুষ পাচার করা হয়। তবে এখন প্রলোভিত হওয়া মানুষদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। আমরা এখন একটি ভালো জায়গায় আছি। অনেকে এখন বাংলাদেশে আসছে নিজেদের ভাগ্য বদলানোর জন্য। বাংলাদেশ থেকে মানব পাচারের ফিগার অনেক কমেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি জেলায় পানব পাচার রোধে পুলিশের কমিটি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়। এছাড়া, বর্ডার এলাকায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের আদালত থেকে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বাদল ফরাজিকে বাংলাদেশে আনা হলেও তিনি কারাগারে বন্দী আছেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বাদল ফরাজির বিষয়টা নিয়ে একটি জটিলতা আছে। এখন একটাই পথ খোলা রাষ্ট্রপতি যদি তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেন, তাহলেই সে মুক্তি পাবে। কখনো যদি সেই সুযোগ আসে, রাষ্ট্রপতি যদি ক্ষমা করেন তাহলে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
এসময় আরো বক্তব্য দেন, আইওএম বাংলাদেশের প্রধান গিওরগি গিগাউরি, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, অ্যাটসেক ইন্ডিয়ার ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর মানবেন্দ্র নাথ মন্ডল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।