দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণের পর গত তিনদিন এই ভাইরাসে মৃত্যুু শূন্যের ঘরে নেমে এসেছে। বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশে এত দ্রুত একটি ভয়াবহ ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু কমানোতে সরকার নিঃসন্দেহে একটি বড় মাইল ফলক অর্জন করেছে। বাংলাদেশই খুব দ্রুত ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করে সরকারি ব্যবস্থাপনায়। সরকার বিনামূল্যে কোটি কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দিয়ে জনগণের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা দেশে কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন দেখল বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের চেয়ে নতুন রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এ সময়ে ২৩৩ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ১৮২।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর জানানো হয়। শুরুতে মৃত্যু অনিয়মিত থাকলেও সে বছরের ৪ এপ্রিল থেকে করোনায় মৃত্যু ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এরপর থেকে গত দুই বছর ধরে চলা এই মহামারিকালে গত বছরের ২১ নভেম্বর ও ৯ ডিসেম্বর এই দুই দিন ছিল করোনায় মৃত্যুশূন্য। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনার সংক্রমণচিত্রে কয়েক দফা ওঠানামা দেখা গেছে। দেশে করোনা পরিস্থিতি প্রায় সাড়ে তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের প্রভাবে দ্রুত বাড়তে থাকে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার। গত ৬ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। এর দুই সপ্তাহের মাথায় ২০ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় দৈনিক রোগী শনাক্ত ১৫ হাজারের ওপরে উঠেছিল। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা ১০ হাজারের ওপরেই ছিল। এরপর নিয়মিতভাবে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার কমছে। দেশে করোনা সংক্রমণ কমায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে বিধিনিষেধ। করোনায় দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৭। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ২৯ হাজার ১১২ জন, সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ১৬১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৬১ জন।
করোনা সংক্রমণে সারা বিশ্ব যেভাবে নিশ্চল হয়ে গিয়েছিল তা থেকে এখনও অনেক দেশ মুক্ত নয়। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে করোনায় টানা তিনদিন মৃত্যুহীন দেখল তাতে বিশ্ববাসী অবাক হতে পারে। এসবই সরকারে সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও জনগণের সচেতনতার কারণে সম্ভব হয়েছে। যদিও আমরা এই অবস্থায় নিশ্চিত হতে পারি না তবু আমরা মনে করি এটি একটি উল্লেখযোগ্য অবদান এই সরকারের। শত অব্যবস্থাপনা অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতাকে জয় করে বাংলাদেশ সহসাই করোনামুক্ত হবে বলে আমরা আশা করি।
বিজ্ঞাপন