চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঐক্যের কথা বলেও বরিশালে বামদলের প্রার্থী দু’জন কেন?

বার বার ঐক্যের কথা বলেও বামদের মধ্যে বিভাজনই রাজনীতির অগ্রযাত্রায় বামদলের পিছিয়ে থাকার মূল কারণ বলে মনে করছেন অনেকে। তা না হলে বরিশাল নির্বাচনে কেন একক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারল না তারা, এমনই মন্তব্য করছেন অনেকে।

বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য বাসদ থেকে মনোনয়ন দেওয়ার হয়েছে ডা. মনীষা চক্রবর্তীকে আর সিপিবি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আবুল কালাম আজাদকে। বাম দল থেকেই দুজনকে মনোনয়ন দেওয়ায় অনেকেই এখনও দেখছেন বিভাজনেরই সুর।

শঙ্কর মৈত্র নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বামদের ঐক্য কোন পর্যায়ে বরিশালের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। সেখানে মেয়র পদে সিপিবি ও বাসদের আলাদা দুই প্রার্থী। দেশের বামদের মূল সমস্যা বরিশালই প্রমাণ।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

অ্যাডভোকেট রফিক উদ্দিন আহমেদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বাম জোটের দুইজন প্রার্থী মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। তারা বাম ঐক্য বাম ঐক্য বলে তারস্বরে চিৎকার করলেও নিজেদের মধ্য ঐক্য নাই। বামদের এই হাস্যকর ঐক্য, জোট প্রমাণ করে তারা নিজেরাও বুর্জোয়া রাজনীতির বাইরে যেতে পারে নাই। তথাকথিত বাম প্রগতিশীলদের ১১ দলীয় জোট বিগত ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনেও কোথাও একক প্রার্থী দিতে পারে নাই।

তবে এটাকে বড় কোনো সমস্যা নয় বরং স্থানীয় দুর্বলতা হিসেবেই দেখছেন সিপিবি ও বাসদের নেতারা।

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এর আগে তো বামদলগুলোর মধ্যে বিভাজন আরো বেশি ছিলো, এখনই বরং সবাই কাছে এসেছে। আমরা তো আগে এই নির্বাচনের এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করিনি সেজন্য এবার বরিশালে দুজন প্রার্থী।  আগে আলোচনা হলে নিশ্চয়ই একক প্রার্থীতা দেওয়া হতো। আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। কিন্তু সেটা চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার আগেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে।

তিনি যোগ করেন, আমরা অধিকাংশ জায়গায় ঐক্যমত্যে পৌছাতে পেরেছি। কিছু জায়গায় সংঘর্ষ আছে সেগুলো শিঘ্রই নিরসন করা হবে। সময়ের স্বল্পতার জন্য নিরসন করতে পারিনি। নিশ্চয়ই বামদলগুলো ঐক্যমত্যে আসবে। তাছাড়া বামপন্থীদের মাত্র দুজন প্রার্থী নিয়ে এত হৈচৈ, আর ডানপন্থী দলগুলো থেকে যে এত এত প্রার্থী তবু তো আলোচনা নেই। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের সময়েও কিন্তু কয়েকটি সিটে মনোনয়ন হয়নি সেগুলো ছিলো ওপেন সিট। মানে তখন একেক জন একেক জনকে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাজেকুজ্জামান রতন

বাসদের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বরিশালে একজন প্রার্থী দিতে পারলে খুবই ভালো হতো। তবে করা যায়নি সেটা একটা দুর্বলতা। সেই দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে আমরা বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের সম্ভাবনাকে বড় করে দেখতে চাই। সিলেটে, গাজীপুরে, খুলনায় আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছি। এমনকি রাজশাহীতেও জনসংহতির প্রার্থী সদস্য থাকার পরও বাসদ যথেষ্ট কাজ করেছে। এই স্থানীয় দুর্বলতাকে বড় করে দেখতে চাইনা। সেটাকে এড়িয়ে ঐক্যমত্যকে আমরা বড় করে দেখতে চাই।

ভবিষ্যতের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অতীতেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রচেষ্টা ছিলো, সামনেও থাকবে। দুই প্রার্থীর পক্ষেই আমরা প্রচারণা করছি। আগে থেকে সতর্ক থাকলে একক প্রার্থী দিতে পারতাম ভবিষ্যতে এসব দুর্বলতা নিশ্চয়ই আমরা কাটিয়ে উঠবো।