এল ক্ল্যাসিকোতে যুদ্ধংদেহী মনোভাব, আবার স্পেন জাতীয় দলে খেলতে গেলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের জন্য লড়াই, আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলতে গেলে ক্লাবের দ্বন্দ্ব ভুলে এভাবেই যুগের পর যুগ খেলে এসেছেন রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার স্প্যানিশ ফুটবলাররা। যদিও ২০১১ সালে অতিমাত্রায় ক্ল্যাসিকো খেলার ফলে জাতীয় দলে ভাঙন ধরতে বসেছিল, এল পাইসকে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সে সময়ের অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস।
২০১১-১২ মৌসুমে মোট ৬বার একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল-বার্সা, যার ৪টি ম্যাচ আবার ছিল খুব কাছাকাছি সময়ে। পেপ গার্দিওলার অধীনে তখন ইউরোপের পরাশক্তি হয়ে উঠেছে কাতালান জায়ান্ট বার্সা, অন্যদিকে নিজের আগ্রাসী মনোভাব রিয়ালের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন হোসে মরিনহো।
পাশাপাশি মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ ছিল দর্শকদের জন্য বাড়তি পাওনা। স্প্যানিশ সুপার কাপ, কোপা ডেল রের কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে সেবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর উপর আধিপত্য ধরে রেখেছিলেন মেসিরা।
দর্শকদের যা বিনোদন যুগিয়েছে, সেটা আবার স্পেনের জন্য হয়ে উঠেছিল বোঝা। বিশেষ করে খুব কাছাকাছি সময়ে চার ক্ল্যাসিকোর তেজ খেলোয়াড়রা জাতীয় দলের ড্রেসিংরুম পর্যন্ত টেনে এনেছিলেন। এল পাইসের কাছে এ তথ্য ফাঁস করেছেন ক্যাসিয়াস।
অধিনায়ক হিসেবে তখন দুদলের খেলোয়াড়দের কীভাবে সামলাবেন সেটাই ছিল ক্যাসিয়াসের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে তিনি নিজে তখন রিয়ালের অধিনায়ক।
‘খুব অল্প সময়ে আমরা চারটা এল ক্ল্যাসিকো খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আমরা তখন অনেকবেশি ম্যাচ খেলেছি। এই চারটা ম্যাচ দিয়ে তখন স্প্যানিশ ফুটবলকে বোঝানো হতো, আর সবকিছুই ছিল এই চার ম্যাচকে ঘিরে।’
‘শেষ পর্যন্ত একটা রাজনৈতিক আবহ চলে আসত। ব্যাপারটা ছিল বার্সা জিতলে কাতালোনিয়ার কাছে মাদ্রিদ হেরে যাওয়ার মতো। এতে আমাদের দোষ ছিল না। কিন্তু আমরাই এটা ড্রেসিংরুম পর্যন্ত টেনে এনেছি। ড্রেসিংরুমে ঢুকলেই সেটা টের পাওয়া যেত। আমরা বুঝতে পারছিলাম, আমাদের সম্পর্কটা ঠিক আগের মতো নেই।’
‘কার্লোস পুয়োলের (বার্সার সাবেক অধিনায়ক) সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। সে আমাকে বলেছিল একবার নাকি আমাকে তার খুব আঘাত করতে ইচ্ছা করছিল। উত্তরে বলেছিলাম আমি জানি, কারণ আমারও একই ইচ্ছা ছিল!’
বিষয়টা যদিও সরাসরি স্বীকার করেননি স্পেনের তৎকালীন কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক। রিয়ালের সাবেক কোচ হয়েও জাতীয় দলে বার্সার খেলোয়াড়দের মন জয় করতে পেরেছিলেন তিনি। জাতীয় দলে থাকাকালে তার নিরপেক্ষ আচরণ বেশ প্রশংসিত হয়েছিল সেসময়।
‘আমি কারও পক্ষে ছিলাম না। এটা হতে পারে হয়তো কেউ রাজনৈতিক আলোচনা করেছিল সেজন্য। আমি এরকম রাজনৈতিক কোনো আলাপ শুনিনি।’