শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত বাংলা ছবি ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’। ছবিটি নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত ছিলেন সিনেপ্রেমী দর্শক। মুক্তির পর ছবিটি নিয়ে সেইসব দর্শকের প্রতিক্রিয়া, আগ্রহ কেমন ছিলো, তা দেখতেই সরেজমিনে ছিলেন এই প্রতিবেদক।
ছবিটি মুক্তি পেয়েছে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স এর তিনটি শাখা ও যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাসে। এছাড়া বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনেও শুক্রবার থেকে চলছে ছবিটি।
বসুন্ধরায় অবস্থিত স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রতিদিন তিনটি করে প্রদর্শনী হচ্ছে ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ এর। এখানে প্রথম দিনের প্রতিটি শোতেই দেখা গেছে ছবির নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলসহ ছবির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের। সিনেমা দেখে বের হওয়ার পর দর্শকরা জানিয়েছেন তাদের দারুণ অভিজ্ঞতার কথা।


শুক্রবার সন্ধ্যা রাতের শো দেখে বের হয়ে এক দর্শক জানান, ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে বহুদিন অপেক্ষায় ছিলাম, অবশেষে ছবিটি দেখলাম। ছবির টিজার, ট্রেলার দেখে কারো বোঝার সাধ্যি নাই যে, এটি এতো দারুণ প্রেমের ছবি! সত্যিই বহুদিন পর একটি অন্যরকম তুমুল প্রেমের ছবি দেখলাম।
এরআগে স্টার সিনেপ্লেক্সের টিকেট কাউন্টারে শুক্রবার সন্ধ্যায় আরিফুল ইসলাম নামের এক দর্শকের সঙ্গে কথা। তখনও ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ শুরু হতে মিনিট কুড়ি বাকি। হন্যে হয়ে তিনি টিকেট খুঁজছেন, কিন্তু কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, টিকেট হাওয়া!
তাকে হন্তদন্ত দেখে নিজ থেকেই কথা হয়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানালেন, কুমিল্লায় একটি ব্যাংকে কাজ করেন তিনি। প্রায়শই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি ঢাকায় বন্ধুর বাসায় চলে আসেন, ফিরে যান শনিবার সন্ধ্যায়। তবে এবারের ঢাকায় আসার একমাত্র উদ্দেশ ছিলো ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ দেখা। কারণ এই নির্মাতার দাস কেবিন, যে জীবন ফড়িংয়ের দেখে ভক্ত বনে গিয়েছিলেন তিনি! টিকেট না পাওয়ায় খুব হতাশ হয়েছেন।
জানালেন, ভেবেছিলাম বৃষ্টি বাদলার দিনে দর্শক কম আসবে, হয়তো স্বশরীরে গিয়েই টিকেট পাবো! কিন্তু শো শুরুর আধ ঘন্টা আগে এসেও টিকেট পেলাম না!
শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে তাকে পরের দিনের (শনিবার) অগ্রিম টিকেট করে নিতে দেখা যায়!
আরিফুল ইসলামের মতো এদিন সন্ধ্যায় বহু দর্শকের দেখা পাওয়া গেল স্টার সিনেপ্লেক্সের বিশাল লবিতে, যারা এদিন সন্ধ্যার শো দেখতে এসে টিকেট পাননি। এরমধ্যে আছেন চলচ্চিত্র জগতের তারকা মুখও। টিকেট না পাওয়ার বিষয়টিকে এসময় অনেককে বাংলা সিনেমার জন্য ‘গুড সাইন’ বলেও মন্তব্য করতেও শোনা যায়।
এদিকে শো শেষে দর্শক প্রতিক্রিয়াও ছিলো দেখার মতো। প্রত্যেকেই ভিন্নভাবে ছবিতে প্রেমের দারুণ উপস্থাপনের প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ প্রশংসা করেছেন, ছবির পাত্র-পাত্রী নীরা আর অয়নের উন্মাদনা আর অভিনয়ের। কেউ প্রশংসা করেছেন রাজধানীর ব্যস্ততম রাস্তায় নির্মাতার এমন শুটিং প্ল্যানের!

এসময় মধুর যন্ত্রণাও পোহাতে দেখা যায় নির্মাতাকে! দর্শকের অনুরোধে একের পর এক সেলফিতে অংশ নেয়া তো ছিলো এদিন খুব সাধারণ ঘটনা! নির্মাতা মজা করে একবার মুখ ফুটে বলেই ফেলেন, ‘জীবনে যতোবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছি, তার যোগফল শুধু আজকের দিনের তুলনায় সামান্যই হবে!’
এরই ফাঁকে সেলফি নিতে আসা এক দর্শক নির্মাতাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘ভাই, ভি সাইন দেখান’। এসময় নির্মাতাকে বলতে শোনা যায়, ‘ভি সাইন দেখানোর সময় হয় নাই রে ভাই, আরো কিছুদিন যাক!’