বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের আশঙ্কার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভয়াবহ বন্যা। মানুষের দুর্গতির শেষ নেই। এর মধ্যে এসেছে পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। কিন্তু এই ঈদ কোন বাড়তি উপলক্ষ নিয়ে আসতে পারেনি টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলে।
করোনার কর্মহীন সময়, নদী ভাঙন আর ফসলহানীর ক্ষতি সামলে না উঠতেই, দীর্ঘস্থায়ী বন্যার ধকল সামলাতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের। আর তাই এবারের ঈদ বছরের অন্য যে কোন যাপিত দিনের মতোই সাদামাটা।
দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ডুবে আছে এই জেলার অধিকাংশ অঞ্চল। এর মধ্যে চরাঞ্চলের প্রায় সবকটি গ্রামের সর্বত্রই থৈথৈ করছে পানি। করোনার প্রভাব, নদী ভাঙন, ফসলহানি ও লম্বা সময় ধরে কর্মহীন থাকায় প্রভাব পড়েছে ঈদ পালনে। ঈদের দিনটিও তাদের অন্যান্য দিনের মতোই কাটাতে হবে নিদারুণ কষ্টে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গাবাসারা ইউনিয়ন এরমধ্যে একটি। এই ইউনিয়নে যমুনার বুকে জেগে উঠা ৪৭টি গ্রামের প্রায় সবকটি স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ডুবে আছে বন্যার পানিতে। যতদূর দৃষ্টি যায় পানি আর পানি। এই চরের মেঘারপটল গ্রামের ৭০ বছরের প্রতিবন্ধী বাসিন্দা জামাল শেখ পরিবার। জীবনে দশবার নদী ভাঙনের কবলে পড়ে তিনি এখন নিঃস্ব। আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের সামান্য উঁচু ভিটায়। দুটি সন্তান নিজেদের মত পৃথক সংসার করায় প্রতিবন্ধী ভাতার উপর নির্ভর করে চলছে হয় গোটা জীবন। শেষ কবে ঈদ পালন করেছেন সেটিই মনে করতে পারেন না তিনি।
জামাল শেখকে সহযোগীতা করবেন এমন সঙ্গতি নেই কারও। কর্মহীন মানুষগুলি যেখানে প্রতিদিনের জীবন পার করছেন অনাহারে অর্ধাহারে সেখানে ঈদ পালন তাদের কাছে দিবা স্বপ্নই।
তবে গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন বলেন, কঠিন এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, গোপালপুর, কালিহাতী ও নাগরপুরের চরাঞ্চলের অন্তপক্ষে ১৫ টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক মানুষ ঈদের দিনটি পার অন্যান্য সাদাকালো দিনের মতোই।