ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে। করোনা পরবর্তী নড়বড়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধ হতে পারে ‘মড়ার ওপর খাড়ার ঘা’।
ইউরোপে স্মরণকালে বৃহত্তম যুদ্ধ শুরু আগেই বেড়ে গিয়েছিলো তেলের দাম। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে পুতিনের সামরিক অভিযান ঘোষণার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এশিয়াতে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের (৪২ মার্কিন গ্যালন বা ১৫৯ ব্রিটিশ লিটার) দাম বেড়ে ১০১.৩৪ ডলারে উঠেছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এর দাম ছিল ১০১.২০ ডলার।
রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মান রেকর্ড ৫ দশমিক ৪ শতাংশ পরিমাণে কমেছে। বড় ধরনের দরপতন দেখছে বিশ্বের প্রধান শেয়ারবাজারগুলো।
ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশ আর জ্বালানি তেলে ২৫ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর প্রথম যে জিনিসটির দাম বেড়ে গেছে সেটি হলো জ্বালানি তেল।
দীর্ঘকালীন যুদ্ধের কারণে দেখা দিতে পারে আমদানি-রপ্তানি বৈকল্য। রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় গম রপ্তানিকারক। তাই রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে তুলবে খাবারের দাম।
ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর সাথে মস্কোর কূটনৈতিক সম্পর্ক আগে থেকেই ভাল নেই। বড় যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ীভাবে নষ্ট করবে সম্পর্ক। রাশিয়ার সাথে চীনের সম্পর্ক ভালো হওয়ায় চীনও রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তবে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক ক্রিমিয়ার মতো পরিণতি বরণ করলে, সামরিক জোট ন্যাটোর দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে পালে রেখে পাল্টা রণযুদ্ধ বা অর্থনৈতিক যুদ্ধের ডাক দিতে পারে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো।
রাশিয়ার ও ইউক্রেন দু’ দেশের অনেক মানুষেরই পাশের দেশে বড় বিনিয়োগ ও ব্যবসা স্থাপনা রয়েছে। যুদ্ধের কালো ছায়া গ্রাস করেছে এসব ব্যবসাকেও।
রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধাতু জাতীয় পদার্থ রপ্তানিকারক। এসব ধাতু মোবাইল ফোন ও মোটর ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য অপরিহার্য হওয়া বাড়তে পারে এগুলোর দামও।
বিশ্লেষকরা বলছেন যুদ্ধের সবচেয়ে বড় মূল্য অর্থ-সম্পদে নয়, হবে মানব জীবনের হিসাবে। ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কাতো আছেই, সাথে পাল্টে যাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার লাখ-লাখ মানুষের জীবন।