একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন: ১৪ দল কোনো ব্যক্তি নয়, এটি একটি সংগঠন। জোটগতভাবে আমরা কাজ করছি, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।
আমরা তার বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেছি, তাকে নিয়ে আমরা বসে আবারও আলোচনা করবো; প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবশ্য ১৪ দল আয়োজিত বাংলাদেশ-ভারত ‘সমঝোতা স্মারক শীর্ষক’ গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলে না মেনন। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
নাসিম বলেন: এক মুখ চেনা স্বাধীন বিরোধী অপশক্তি সব সময় বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বকে বাঁকা চোখে দেখেছে। সাম্প্রতিকালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ভারতে সফর করে অনেকগুলো সম্মিলিত স্মারক সাক্ষর করেছেন। এগুলো বুঝে-না বুঝে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ হচ্ছে গুজব আর অপপ্রচারের দেশ।

গুজবকে তথ্য ও যুক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতেই এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
১৪ দল সব সময় এ দেশের সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সভা-সেমিনার করে থাকে দাবি করে নাসিম বলেন: আমি বিশ্বাস করি একটি প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সমস্যা থাকবে। সেই সমস্যার সমাধান হবে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে।
এ সময় তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন: বিরোধী দলের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে রাজপথে মিথ্যাচার চালিয়ে, সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না।
গোলটেবিল বৈঠকে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর ( অব.) হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন( বিএফইউজে)সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ অনেকে।
এর আগে শনিবার দুপুরে বরিশাল নগরীর টাউন হলে ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তারপরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।
১৪ দলের শরিক দলীয় নেতা রাশেদ খান মেনন বলেন, আপনি-আমি মিলে যে ভোটের জন্য লড়াই করেছি, আজিজ কমিশনকে ঘেরাও করেছি, আমরা এককোটি ১০ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা ছিঁড়ে ফেলে নির্বাচন বর্জন করেছি; মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরও। আজকে কেন ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং জাতীয় নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারছে না?
ওয়ার্কাস পর্টির এই নেতা বলেন, উন্নয়ন মানে গণতন্ত্র হরণ নয়। উন্নয়ন মানে ভিন্ন মতের সংকোচন নয়। উন্নয়ন মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ নয়। উন্নয়ন মানে গণতন্ত্রের স্পেস কমিয়ে দেওয়া নয়।
তিনি বলেন, ক্যাসিনো মালিকদের ধরা হচ্ছে, দুর্নীতিবাজদের ধরা হচ্ছে, কিন্তু দুর্নীতির আসল জায়গা নির্বিঘ্ন আছে। সেই দুর্নীতিবাজদের বিচার কবে হবে, তাদের সাজা কবে হবে, তাদের সম্পদ কবে বাজেয়াপ্ত হবে?