চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

জবার জৈবতা অথবা রক্তজবার ক্ষত

অন্য জল, অন্য অন্ন, অন্য অগ্নির মতো আমাদের ভেতর বাস করে আরেক মানুষ। আর জনমে ছ্যাইলা কইরহে আর জনমে মাইয়া কইরহে! জনম ঘুরাইয়া লও হে জনম ঘুরাইয়া লও হেএএএ ছ্যাইল্যা ছ্যাইল্যা ছ্যাইলা, মাইয়া মাইয়া মাইয়া আর জনমে কইর হে।।শরীর বিদ্যা পঠনে স্বর্গীয় কৌতুকীর প্রতি বিশ্বাসী হয়ে উঠবে মানুষ। তাই শরীর বিদ্যা কখনও ধর্মগ্রন্থ হয়ে ওঠে। যে পড়বে সে নত হবে লুকানো শক্তির বিস্ময় থেকে তপস্যায়। শারীরবিদ্যা যা অনুসরণ ও ধারণ করে আয়োজিত, মানবদেহকে ব্যাখ্যা ও শিক্ষার জন্য আধারিত, তা সৃষ্টির জন্য স্রষ্টার প্রতি চমকিত ও শ্রদ্ধাকাতর অবনত করবে।…

মিনারের কবিতা, কবিতার মিনার

তার নির্বাচিত কবিতার বইয়ের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে মনে পড়বে জলপাই জমানার কথা। মনে পড়বে জলপাই পাতার মুকুটের বদলে খাঁড়া দুটো সিং। বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে পড়া স্বদেশের কথা মনে পড়বে। মনে পড়বে পদাবলী, কবির লড়াই। তখন ঘাতক ছিল লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাক। রাজপথে মিছিলে-মিছিলে ছাত্র-জনতা একেবেঁকে চলে গিয়েছে। বিপ্লব তখন অনেকটা মানুষের মতো। আমাদের পথ লাল হয়েছে মিছিলে এবং রক্তের প্রতিকণায় ছিল প্রতীক্ষা। সুঠাম পেশীতে সাহস বুনে সযত্ন রোদন সবার। ক্রন্দনের চেয়েও সরব শ্লোগান; আর প্লাকার্ডে-ফেস্টুনে-পোস্টারে কবিতার শ্লোগান কিংবা শ্লোগানে কবিতা। মনে…

‘লাল পতাকার নিচে সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নান্দীপাঠ

সংস্কৃতির অনেকটা ক্ষয়-ক্ষতি হয়ে গেছে এই ভুবনায়নের সময়ে মিথ্যার রূপায়নে। সংস্কৃতি উত্থিত হয় স্থানিক-লগ্নতায়, বিকশিত হয় মানুষের কর্ষণে-প্রকৃতির বর্ষণে; সংস্কৃতি প্রভাবিত হয়, জারিত হয়, সঞ্চালিত হয়; সংস্কৃতি না বাঁচলে সভ্যতা টিকে থাকে না।এই আবহে একটি জরুরি গ্রন্থ আমাদের জন্য রচনা করেছেন মহসিন শস্ত্রপাণি। তাকে জানাই লাল গোলাপ শুভেচ্ছা। এই রকম একটি গ্রন্থের প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভবে ছিল।নি:সন্দেহে গ্রন্থ ‘লাল পতাকার নিচে সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ আমাদের সাংস্কৃতিক দস্তাবেজের হাতিয়ার। আমাদের শোভিত করে শেঁকল ভাঙার ব্রতে উজ্জীবিত…

তথ্য সত্য দূরত্ব

হাতে বইটি তুলে নিয়ে মনে রাখা দরকার, কী গণমাধ্যম পরিস্থিতি ও দেশীয়-বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সাংবাদিক লিখলেন অশেষ দাবার চাল।সাংবাদিকের কলম কখনো হয়ে ওঠে রাইফেল আবার কখনো হয়ে ওঠে নতমুখী।সাংবাদিক হরেক রকম অস্ত্র নিয়ে চলেন; তিনি কখনো রচনা করেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, আবার বিশ্লেষণধর্মী হয়ে ওঠে কখনো কোনও প্রতিবেদন; প্রতিবেদনে থাকতে পারে সত্যের উন্মোচন- তা যেমন সত্যি; আবার সত্য গোপনও ঘটে যেতে পারে অলক্ষ্যে। হলুদ সাংবাদিকতা, এমবেডেড সাংবাদিকতার মতো অপ-সাংবাদিকতায় মাত্রা যোগ হয়ে এসেছে যেখানে সীমান্ত নাই, এমনই কপি-পেস্ট আর নীল…

অনন্ত অঙ্গনে ভ্রমণমগ্ন

পর্যটন, মানুষের আদি স্বভাব। পর্যটনের প্রভাব ছাড়া সভ্যতার সৃষ্টি হতো না।অনাদিকাল হতে মানুষ স্বেচ্ছায় কিংবা বাধ্যগতভাবে যুক্ত হয়েছে Displacement এবং Migration প্রক্রিয়ায়; এখানে অভিজ্ঞতা অনন্য বিপন্নতা এবং তা পর্যটনের নামান্তর; কিন্তু পর্যটন বলতেই সেই রকম নিষ্ক্রান্ত হওয়া কিংবা বর্জিতের অঘটন বলে গ্রাহ্য করা হয় না।পর্যটনের রয়েছে ভ্রমণযোগ। রয়েছে নতুন সব উন্মোচন। প্রকৃতির সঙ্গে সাক্ষাৎ রয়েছে। চোখ দিয়ে দেখে দেখে কখন যেন বন্ধ কপাট খুলে যাওয়া আছে- মনে, ভ্রমণে।সম্যক হয় না প্রকৃতি কেবল; মানুষের প্রাণ স্পন্দিত না হলে প্রকৃতি…

যেহেতু নারীর কোনও দেশ নাই

কলাম সমগ্র তসলিমা নাসরিনের। নাম তার ‘সকল গৃহ হারালো যার’- কবিতার মতো, চুল খোলা শোকের মতো; শোক তার দীর্ঘ চুল খোলে, বিছিয়ে দেয় পূর্ণিমায় নীরবতা, অমাবশ্যায় আর্তনাদ।গ্রন্থের নামকরণ, সকল গৃহ হারালো যার, এখানে ক্রিয়ার সমাপিকা-অসমাপিকা অনুপস্থিত অথচ রয়েছে বিস্তারিত প্রকাশ অথবা অজস্র সূচি মুখ। বড় অপরাধী হয়ে দেখি জেনানা ফাটক। হয়তো আপে, মনস্তাপ, দুঃখ-শোক, হাহাকার রুদ্ধমান হয়ে রয়েছে তবু শব্দের পরপর স্থাপনা ছোবল দিয়ে ওঠে; উষ্মা ও ক্রোধের বরফ ঠাণ্ডা প্রলেপে প্রতিফলিত তার কলমে।তখন ছিল আশির দশক – অসহ-বিসহ এক সময় এসেছিল আমাদের…

হত্যা ও ব্যর্থতার উপাখ্যান এবং তারপর

বলি, শ্রাবণ হয়ে এলে ফিরে ॥ফিরে ফিরে আসে শ্রাবণ, প্রতি বছর, বাংলায়।ফিরে আসে বাকরুদ্ধ সময়; ফিরে আসে স্মৃতি-বিস্মৃতি; ফিরে আসে স্বপ্ন; ফিরে আসে রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জীবনানন্দ-আমৃত্যু আমাদের মুজিবুর ফিরে আসে বাংলায়, বাদল দিনে, শ্রাবণে; ফিরে আসে রক্ত ডোবানো, অশ্রুময় অক্ষরমালা,-বলব, বারিধি মুদ্রণ।বারিধি মুদ্রণের অপর নাম ইমেজ হয়ে থাকে শ্রাবণ প্রকাশনী।রাগী- বৈরাগী রবীন আহসান। বই ছাপেন না, তিনি বিষয় প্রকাশ করে চলেছেন,- তিনি মুদ্রার মতন মুদ্রণ করে চলেই চলেছেন, তাও তো নয় একেবারেই। অক্ষরময় বিষয়-অনবরত ধারাপাত, শ্রাবণ রাতে আমাদের…