সক্রিয় কয়লা, তার ইংরেজি নাম ‘অ্যাকটিভেটেড চারকোল’ হিসেবেই বেশি পরিচিত সবার কাছে। ত্বক সচেতনদের কাছে অ্যাকটিভেটেড চারকোল এখন একটি পছন্দের উপাদান। আগে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হলেও বর্তমানে বিশ্বের নামীদামী স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ডগুলো তাদের ফেস ওয়াস, স্ক্র্যাবার এবং পিল অব মাস্কের মূল উপাদান হিসেবে অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করছে। এছাড়াও পানির ফিল্টার, ফটোকপিয়ারের কালি, বিষ ধ্বংসকারী ওষুধ, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, দাঁত পরিষ্কার করার ওষুধে অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাধারণ কয়লার সাথে অ্যাকটিভেটেড চারকোলের পার্থক্য
সাধারণ কয়লা এবং অ্যাকটিভেটেড চারকোলের মাঝে মূল পার্থক্যটা হলো অ্যাকটিভেটেড চারকোল তৈরিতে কোনো বিষাক্ত উপাদান ব্যবহার করা হয় না। হাড়, পাট কাঠি, নারকেলের শক্ত আবরণ, জলপাই কাঠ ইত্যাদি উপকরণ পুড়িয়ে অ্যাকটিভেটেড চারকোল তৈরি করা হয়। এই কয়লাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় অক্সিডাইজ করে ফাঁপিয়ে তৈরি হয় অ্যাকটিভেটেড চারকোল।
ত্বকের যত্নে অ্যাকটিভেটেড চারকোল
- অ্যাকটিভেটেড চারকোল ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করে ত্বককে পরিষ্কার করে। ফেস মাস্ক হিসেবে অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করলে ত্বক থেকে ব্যাকটেরিয়া, ক্ষতিকর কেমিক্যাল, বিষাক্ত উপাদান এবং ধুলো ময়লা দূর হয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়।
- অ্যাকটিভেটেড চারকোল রোমকূপ ছোট করে। তাই মেকআপের আগে প্রাইমার হিসেবে অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি রোমকূপ ছোট হয়। ফলে ত্বকে মেকআপ খুব ভালোভাবে বসে।
- নিয়মিত অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহারে ব্রণ সমস্যার সমাধান হয়। ত্বকের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করার কারণে ব্রণের সমস্যা কিছুদিনের মধ্যেই কমিয়ে ফেলে অ্যাকটিভেটেড চারকোল। সেই সঙ্গে সপ্তাহে তিনবার অ্যাকটিভেটেড চারকোল দিয়ে স্ক্র্যাবিং করলে ব্রণের দাগ ধীরে ধীরে কমে যায়।
- পোকার কামড়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতেও অ্যাক্টিভেটেড চারকোলের জুড়ি নেই। মিনারেল পানির সাথে অ্যাকটিভেটেড চারকোল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে পোকার কামড়ে লাগিয়ে রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বালা-যন্ত্রণা কমে যায়। অ্যাকটিভেটেড চারকোল পোকার বিষ শোষণ করে নেয়ার কারণে খুব দ্রুত জ্বালা কমে যায়।
যেখানে পাওয়া যাবে
ফার্মেসিতে ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায় অ্যাকটিভেটেড চারকোল। এই ট্যাবলেট খুলে ভেতরের অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করা যায় ফেইস প্যাক হিসেবে। এছাড়াও বিভিন্ন ভেষজ দ্রব্যের দোকানে অ্যাকটিভেটেড চারকোল কিনতে পাওয়া যায়।
পাট কাঠি থেকে অ্যাকটিভেটেড চারকোল উৎপাদন করছে বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান। ২০১২ সাল থেকে এই চারকোল রপ্তানি হওয়া শুরু হয়েছে। দেশে বিদেশে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে অ্যাকটিভেটেড চারকোল বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় শিল্প।