পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার সংক্রান্ত ৫৪ ধারা ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল বাতিল করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে আদালত বলেছেন, এই মামলায় পূর্ণাঙ্গ রায় হাই কোর্টের কিছু নির্দেশনা পরিবর্তন বা সংশোধন করে দেয়া হবে।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে দিয়ে এই সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করেন।
প্রায় একযুগ পর বুধবার আলোচিত ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারা বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলের রায় দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
পরে রিটকারীর আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম বলেছেন, তের বছর পরে এই রায় ঐতিহাসিক। ফলে ৫৪ ধারায় গ্রেফতারের সময় অবশ্যই হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো মানতে হবে।
এ প্রসঙ্গে রিটকারীর আরেক আইনজীবী সারাহ হোসেন বলেছেন, নির্দেশনাগুলোর মধ্যে গ্রেফতারের সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দেখানো এবং আত্মীয় স্বজনকে জানানো এবং ম্যাজিস্ট্রেট এর অনুমতি নিয়ে একটি কাঁচের কক্ষে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ সহ ঐ নির্দেশনাগুলো পালন করতে হবে।
চলতি বছরের ২২ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা পালিত না হওয়া হতাশা প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আর্জি ছিল আদালত যেন বাস্তবতার বিবেচনায় নির্দেশনা দেন।
যেভাবে আদালতে ৫৪ ধারা: ১৯৯৮ সালে ডিবি পুলিশ সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে এবং পরে পুলিশ হেফাজতে মারা যায় রুবেল। এই ঘটনায় কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন রিট করলে ২০০৩ সালে রায় দেন হাইকোর্ট।
এতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার কথা বলা হয়। রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে তার অনুমতি দেওয়া হয় ২০০৪ সালে।