আরেকটি নতুন বছর কড়া নাড়ছে দরজায়। আর স্মরণের জানালায়, বিদায় নিতে যাওয়া বছরে হারানো কীর্তিমানদের মুখ। ২০১৭ ছিল দেশবরেণ্য অনেক ব্যক্তিত্বকে হারানোর বছর। এ বছর দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অনেক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারিয়েছে দেশ। এদের মধ্যে ২০১৭’র ২১ এপ্রিল চলে গেলেন বাংলা সঙ্গীতাঙ্গনের কিংবদন্তি শিল্পী, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক লাকি আখন্দ। ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৬১ বছর বয়সে বিদায় নেন গানের এই ‘নীল মণিহার থেকে।
২১ আগস্টে আমরা হারিয়েছি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র নায়ক রাজ্জাককে। গত শতাব্দীর ৫০ এর দশক থেকে যাদের হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র দাঁড়িয়েছিল। ৭৬ বছর বয়সে পঞ্চাশ বছরের বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র জীবনের ইতি টানলেও দেশের মানুষের মনে ‘অনন্ত প্রেম’ রেখে গেলেন প্রায় ৩শ’ চলচ্চিত্রের অভিনেতা আর বহু চলচ্চিত্রের পরিচালক-প্রযোজক এ কিংবদন্তি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধারা। তাদের একজন আব্দুল জব্বার…। গানের মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের কুর্ণিশ করার মন্ত্র দিয়ে গেছেন অগণিত ভক্ত শ্রোতাদের। চলতি বছরের ৩০ আগস্ট চিরবিদায় নেন কিংবদন্তী এই শিল্পী।
নভেম্বরের ২৪ তারিখ চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে গেছেন লোক গানের শুয়াচান পাখি, সঙ্গীতশিল্পী ও প্রখ্যাত বংশীবাদক আব্দুল বারী সিদ্দিকী। তার কণ্ঠের যাদু আর মমতাশ্রয়ী বাঁশির সুরে ভেসেছেন অগণিত দর্শক শ্রোতা।
দেশের সব অঙ্গনে প্রিয়মুখ আনিসুল হক। একসময়ের টিভি পর্দার তুখোড় উপস্থাপক, পরে সফল উদ্যোক্তা এবং আরও পরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রিয় মেয়র। স্বপ্ন দেখানো আর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে হাঁটা স্বপ্নবান এ মানুষটি বিদায় নিয়েছেন ডিসেম্বরের এক তারিখ।
৭৪ বছর বয়সে ১৫ ডিসেম্বর চিরবিদায় নেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, জননেতা, মুক্তিযোদ্ধা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর একদিনের ব্যবধানে চলে গেছেন বঙ্গবন্ধুর আরেক সহযোগী মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক।
কয়েকদিনের মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর তালিকায় যোগ হয় আরেক প্রবীণ নেতা সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা আহমেদের নাম। এ বছরই রাজনীতি হারিয়েছে প্রবীণ রাজনৈতিক এম কে আনোয়ারকে। রাজনীতিসহ দেশের শিল্পাঙ্গন হারুনুর রশিদ খান মুন্নুকে হারিয়েছে। শিল্প-উদ্যোক্তা এস এম নজরুল ইসলাম মারা গেছেন বছরের একেবারে শেষদিকে এসে। জীবদ্দশায় নিজ ক্ষেত্রে দেশের জন্যে দিগন্তবিস্তৃত অবদান রেখে গেছেন কীর্তিমান গুণীজনরা। সময়ের আবর্তে বারবার তাদের স্বীকৃতি দিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
ভিডিও রিপোর্টে দেখুন বিস্তারিত: