শীত এলে অল্প ঠাণ্ডা পড়তে না পড়তেই আমরা শীতের কাপড় সংগ্রহ করতে শুরু করি। নানা রকম শাল, সোয়েটার, জাম্পার, মাফলার, আরও কত কী মুড়িয়ে বসে থাকি।
হাতি না হয় বিশাল একটা প্রাণী। কিন্তু তাই বলে কি তার ঠাণ্ডা লাগে না?!
তাই শীত থেকে হাতিদের বাঁচাতে ভারতের একটি হাতি অভয়ারণ্য নিয়েছে অভিনব পদক্ষেপ। অভয়ারণ্যের অধিবাসী হাতিদের জন্য বিশাল বিশাল রঙ-বেরঙের সোয়েটার বা জাম্পার তৈরি করেছে তারা। বরং বলা যায় লাল পাজামার কারণে সোয়েটারগুলোকে লাগে আপাদমস্তক পাজামা সেটের মতো।
রাত নামার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মথুরায় নামে শীত। সেই তীব্র শীত সহ্য করা মোটা চামড়ার হাতির জন্যও কষ্টকর।
তাই সেখানকার ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস এলিফ্যান্ট কনজার্ভেশন অ্যান্ড কেয়ার সেন্টার নামে হাতির অভয়ারণ্য ও সেবাকেন্দ্রে থাকা হাতিগুলোকে শীতের হাত থেকে রক্ষা করতে অভয়ারণ্যের কাছে বসবাসকারী গ্রামের নারীরা গত বছর থেকে হাতির জন্য সোয়েটার তৈরি শুরু করেন। সেবাকেন্দ্রের কর্মীদের অনুরোধেই কাজটি শুরু করেন তারা।
কয়েক মাসের টানা বুননের পর শেষ হওয়া সোয়েটারগুলো প্রথম পরে দেখেছে লক্ষ্মী, ফুলকলি এবং সুজি নামের তিনটি মাদী হাতি। হাতিগুলোর উৎফুল্ল আচরণে অভয়ারণ্যের কর্মীদের বিশ্বাস: তাদের বেশ পছন্দ হয়েছে সোয়েটারগুলো।
সেবাকেন্দ্রটির প্রতিষ্ঠাতা কার্তিক সত্যনারায়ণ জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে যে সব পোষা হাতি মালিকের চরম অবহেলা বা নির্যাতনের শিকার হয়, তাদের উদ্ধার করে এনে তার অভ্যয়ারণ্যে রাখা হয়। বর্তমানে সেখানে ২০টি হাতি রয়েছে।
কার্তিক বলেন, “আমরা এই হাতিগুলোকে একটি সম্মানের ও নিরাপদ জীবন দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। একই সঙ্গে এদের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সেবাযত্নের ব্যবস্থা করি। এর অংশ হিসেবেই এই শীতে তাদের জন্য আমরা জাম্পার তৈরি করছি।”
তবে শিগগিরই বোধহয় কার্তিককে আরও বেশি বুননশিল্পী যোগাড় করতে হবে। কেননা এ বছরই আরও ৫০টির মতো হাতিকে আশ্রয় দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের। এর জন্য আরও জমি কেনার ব্যবস্থাও নিচ্ছেন তিনি।
ছবিতে দেখুন হাতি ও তার সোয়েটার পরে মডেলিংয়ের আরও কিছু দৃশ্য: