আসন্ন ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে আনন্দের মুহূর্ত কাটাতে নাড়ির টানে কর্মব্যস্ত মানুষেরা রাজধানী থেকে গ্রামের পথে যাত্রা করছেন। কিন্তু ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষকে নানা দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা শোনা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। চ্যানেল আই’র প্রতিবেদনে জানা যায়, গত বছর গাজীপুরের চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ফোর লেনের কাজ শেষ হলেও গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত এখনও মহাদুর্ভোগের কবলে। এর মধ্যে আব্দুল্লাহপুর থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তা আট লেনের হলেও দুই তৃতীয়াংশই সুয়ারেজের নোংরা পানিতে থৈ থৈ। সেইসঙ্গে রয়েছে ঈদের আগে সংস্কার কাজে টঙ্গি থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার জ্যাম। এছাড়া নির্মাণ কাজের কারণে অর্ধেক রাস্তা বন্ধ থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে পড়তে হবে যানজটের কবলে। সাইনবোর্ড পার হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর সিদ্ধিরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড পার হতেও লাগবে অনেক সময়। ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং ভাঙাচোরা রাস্তার কারণেও যানজট বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই উদাহরণগুলোর মতো সারাদেশে অনেক সড়ক, মহাসড়কের একই অবস্থা। এসব ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে ইতোমধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চার লেনের নির্মাণ কাজ মঙ্গলবার থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু বিগত বছর সমূহের কথা পর্যালোচনা করলে এসব পদক্ষেপের পরও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি কিন্তু থেকেই যায়। এবারের যানজটের কারণগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে চার লেন, আট লেন সহ বিভিন্ন প্রজেক্টে সরকারের বিশাল বরাদ্দ থাকলেও শুধু নির্মাণ কাজে অনিয়ম এবং কোন শৃঙ্খলা না থাকায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি এসব সড়ক নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকাংশ দখল হয়ে যাওয়া এবং তা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারাও দুর্ভোগের অন্যতম কারণ। তাই হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কের দখলদারিত্ব রোধ এবং সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি বলে আমরা মনে করি। কেননা এই বিষয়গুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করে মানুষের ভোগান্তি কমানো সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি। তাই এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে উক্ত বিষয়গুলো খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে তা বাস্তবায়নে আন্তরিক হতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।